সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও উগ্র মৌলবাদের বিস্তার ঘটানোর ক্ষেত্রে ফরহাদ মজহারের ভূমিকা কতো নির্লজ্জ তা নিশ্চয়ই কারও অজানা নয় …অসহিষ্ণু ও নৃশংস নীতির উপর ভিত্তি করে ধর্মান্ধ ও মতান্ধ একটি গোষ্ঠী তৈরি করে জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার নানারকম অপকৌশল তিনি উদ্ভাবন করছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। তথাকথিত ইসলামী ভাবধারার রাষ্ট্র গঠন করার নামে তিনি এমন কিছু লেখা লিখেছেন যে লেখাগুলোতে আছে জঙ্গিবাদ সৃষ্টির আহ্বান আছে উস্কানিমূলক বিষয়বস্তু। প্রথম দশকের শুরু থেকে বাংলাদেশে যতো উগ্রবাদী ঘটনা ঘটেছে তার প্রত্যেকটার পক্ষে তিনি নানা রকম যুক্তি স্থাপন করে পাবলিক সেন্টিমেন্ট আদায়ের চেষ্টা করেছেন এবং বেশ কয়েকটি ঘটনার রূপরেখা তিনি নিজেই তৈরী করেছেন।

ধার্মিক বেশে ইসলামিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করার জন্য যে ফরহাদ মজহার এতো সোচ্চার, সেই ফরহাদ মজহার বাস্তবিক অর্থে কতোটা ধর্মসচেতন? এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর বাসায় নিয়মিত মদ্যপান, মদ্যপ অবস্থায় গানবাজনা, বন্ধুত্বের নাম ধরে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার দিনগুলোর কথা উদাহরণ হিসেবে আসতে পারে। তবে এরচেয়েও বড় উদাহরণ হতে পারে তাঁর কবিতার বই “এবাদতনামা”।

এই বইয়ের একটি কবিতায় তিনি লিখেছেনঃ
“বিবি খদিজার নামে আমি এই পদ্যটি লিখি:
বিসমিল্লাহ কহিব না,শুধু খদিজার নাম নেবো।
প্রভু, অনুমতি দাও। গোস্বা করিও না একবার শুধু তাঁর নামে এ পদ্যখানি লিখিব মাবুদ। নবীজীর নাম? উঁহু, তার নামও নেবোনা মালিক শুধু খদিজার নাম- অপরূপ খদিজার নামে একবার দুনিয়ায় আমি সব নাম ভুলে যাব তোমাকেও ভুলে যাব ভুলে যাব নবীকে।” নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী না হয়ে এরকম কোন লেখা সম্ভব কি না তা বুঝার জন্য গবেষক হওয়ার প্রয়োজন নাই। অসভ্যতা ও উগ্রতার কোন স্তরে অবস্থান করে একজন নাস্তিক ধর্মের আবরণে মুখ ঢেকে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধির জন্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরীর পায়চারা করে তা ভাবতেও ঘৃণা লাগে। ফরহাদ মজহার নামক এই মানুষরূপী জানোয়ার অসভ্যের মতো বলেছেনঃ “বোমা হামলাকারীরা সন্ত্রাসী হলে মুক্তিযোদ্ধারাও সন্ত্রাসী” “যুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধ বলে আসলে কিছু হয় নাই, ৭১ সালে মূলত দাঙ্গা হয়েছিলো।”
জানোয়ার টা সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গীবাদ নিয়ে বলেন-
“জঙ্গিবাদ মানে বিপ্লব,জঙ্গীরা বিপ্লবী। “

নিকৃষ্টতম এই ব্যক্তির নাম গতকাল থেকে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ জোরালো ও হাস্যরসাত্মকভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। হঠাৎ গতকাল ভোরে জানতে পারলাম তিনি গুম হয়েছেন, এর অল্প কিছুক্ষণ পরে জানলাম তিনি অপহরণ হয়েছেন । তারপর আরও কিছুক্ষণ পরে জানলাম তিনি নিখোঁজ হয়েছেন। ভোর পাঁচটা পাঁচ মিনিটে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে তিনি কেনো বের হলেন? এই প্রশ্নটা করার সাথে সাথে একটি তথ্য জানিয়ে রাখি, তাঁর ব্যাগে মোবাইল ফোনের চার্জার, শার্টসহ বেড়াতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছিলো। কতোটা বুদ্ধিমান হলে এরকম সাত সকালে ব্যাগে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অপহরণকারীর দিকে এগিয়ে যায় তা ভেবেই তাকে স্যালুট দিতে ইচ্ছে করে। শুধু শুধু কি তাকে বুদ্ধিজীবী বলা হয়??? মহান এই বুদ্ধিজীবী খুলনা থেকে ঢাকা আসার উদ্দেশ্যে হানিফ পরিবহনের বাসের টিকিট কাটার সময় নাম পরিচয় গোপন করে ছদ্মনাম হিসেবে নিজের নাম বলেন গফুর। এই লিমিটেড এডিশন মার্কা গফুর নামটা নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে আমি ভাবলাম । দুনিয়াতে এত্ত নাম থাকতে গফুর কেনো? হানিফ পরিবহনের বাসের Ticket এর গায়ে লেখা নাম গফুর। তখন মনে হল আমার হানিফ বাউলের কণ্ঠে আবদুল গফুর হালীর গান তাঁর প্রিয় তাই হয়তো এই নাম ..

“সোনাবন্ধু তুই আমারে করলি রে দেওয়ানা ” ..
হানিফ বাউলের কণ্ঠে আবদুল গফুর হালীর এই গানটা আমার আসলেই খুব প্রিয়।

ফরহাদ মজহারের নিখোঁজ বা গুম বা অপহরণ নাটকে খালেদা জিয়া একটা সেই রকম কাজ করেছেন। তথাকথিত অপহরণের ১৬ ঘণ্টা পরে বা উদ্ধারের ঘণ্টাখানেক আগে তিনি টুইটারে টুইট করেনঃ ” ফরহাদ মজহারকে এখনি তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় এর দায় সরকারকে নিতে হবে। এটি শাসকচক্রের আরেকটি নিষ্ঠুর কর্ম।”

বাহ্ …
চমৎকার…..
ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের অল্প কিছুক্ষণ আগে হলেও ম্যাডাম খালেদা সরকারকে একটা হুমকি দিতে সক্ষম হয়েছেন বলে তার প্রতি

গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

 

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn