১০০ টাকায় দলিল করে নেয়া প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বাড়ি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর চরমভাবে ক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ। তার অভিযোগ, উচ্চ আদালত তার বাড়ির মালিকানা অবৈধ ঘোষণা করলেও রাজউক বিনা নোটিশে তাকে উচ্ছেদ করে বেআইনি কাজ করেছে। আর এর প্রতিবাদে তিনি উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছেন। আর মওদুদের এই বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার শাওন মাহমুদ আর ফেসবুক পেজে তার বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, ১৯৮২ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের দেয়া বাড়ি থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হয়। আর সেটাও করা হয় এক দিনের নোটিশে। গুলশান-২ এর ১৫৯ নম্বরের যে বাড়িতে মওদুদ তিন দশক ধরে থাকছেন, সেটি তিনি অবৈধভাবে দখল করেছেন বলে রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত। গত ৪ জুন আপিল বিভাগ এই রায় দেয়ার পর বুধবার সেই বাড়ি থেকে মওদুদকে উচ্ছেদ করা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে মওদুদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেন তাকে নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদ করা হল। বাড়ির সামনে দাঁড়ানো মওদুদের ছবিটির কথা উল্লেখ করে শাওন মাহমুদ তার ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘অনেক শরীর খারাপেও এই ছবিটা আমাকে সকাল সকাল সোজা করে দাঁড়িয়ে দিলো। দেশ স্বাধীন হবার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শহীদ পরিবারদের বেশ কিছু বাড়ি নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে উপহার দিয়েছিলেন। তার মধ্যে আমাদের বাড়িটি ছিল ১ নং মালিবাগ।’

‘৮২ সালের ফেব্রুয়ারিতে একদিনের নোটিশে সে বাড়িটি থেকে আমাদের উচ্ছেদ করা হয়। একটা কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে স্যুটকেসের ওপর মা বসিয়ে রেখেছিলেন আমায়। বসে বসে পুলিশের তাণ্ডব দেখেছিলাম সেদিন। দোতলা থেকে বাবার ব্যাগ ফেলছিল ওরা। এলপি রেকর্ডগুলা চূর্ণ বিচূর্ণ করে ফেলছিল বারান্দা থেকে। নীচের তলার সংগীত স্কুলের হারমোনিয়াম তবলা তানপুরা উঠোনের এখান ওখানে ছুড়ে ছুড়ে ফেলছিল ওরা। আমি জানতাম না রাতে কোথায় থাকব সেদিন’–লেখেন শাওন।

শহীদ বুদ্ধিজীবীর কন্য লেখেন, ‘সেই উচ্ছেদ প্রকল্পের প্রধান উদোক্তা মউদুদকে স্যুট পরে মাধবীলতা গাছের নীচে দাঁড়িয়ে তার উচ্ছেদ হওয়া বাসার সামনে বলতে শুনলাম যে, তিনি (মওদুদ) ফুটপাতে থাকবেন। হা হা হা মওদুদ সাহেব. ৮২ সালের উচ্ছেদ ভুলি নাই। ভুলবো না। ইটটি মারিলে পাটকেলটি খাইতে হয়। ওহ্ আরেকটা কথা, সেদিন আমরা যদিও জানতাম না কোথায় থাকবো তারপরও ফুটপাতে থাকবার কথা ভাবিনি। প্রতিবেশীর খালি বাসাটা তাৎক্ষণিক ভাড়া নিয়ে নিয়েছিলাম আমরা।’

‘আমি একশো বছর বাঁচবো। হিসাব নিয়ে তারপর যাব’ শেষে লেখেন শাওন মাহমুদ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn