রফিকুল ইসলাম কামাল :: রাত তখন সাড়ে ৮টা। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন ছাত্রদলকর্মী ডন হাসান। আচমকা তার সামনে উদয় হয় কয়েক দানব। ধারালো অস্ত্র দিয়ে চলে একের পর এক কোপ। রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ডন হাসান। কিন্তু তবু থামেনি ঘাতকের অস্ত্রের নির্মম আঘাত। লুটিয়ে পড়ার পরও ডন হাসানের নিথর দেহে আঘাত করে মানুষরূপী দানবরা। প্রাণপাখি উড়ে যায় ডনের। আরেক নির্মম হত্যাকান্ডে রঞ্জিত হয় সিলেটের পিচঢালা পথ। ডন হাসানকে হত্যার দৃশ্য ধরা পড়েছে পার্শ্বস্থ একটি দোকানের সিসি ক্যামেরায়। সেই ধারণ করা ভিডিও হাতে এসেছে।

ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, অন্তত পাঁচ যুবক সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণ করে ডন হাসানের উপর। যুবকদের হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ডনের উপর উপর্যুপুরি আঘাত হানে যুবকরা। আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে পিচঢালা পথে লুটিয়ে পড়েন ডন হাসান। রক্তে ভেসে যায় পিচঢালা পথ। কিন্তু ঘাতকের ধারালো অস্ত্রের আঘাত তবু থামেনি! মাটিতে লুপিয়ে পড়ার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আরো তিনটি আঘাত করা হয় ডনকে। মৃত্যু নিশ্চিত জেনে পাঁচ ঘাতক দ্রুত পালিয়ে যায়। এসময় আশপাশের অনেকেই ঘটনাটি দেখলেও সাহস করে কেউ এগিয়ে আসেননি ডনকে বাঁচাতে।

সিলেট মহানগরীর কোতোয়ালী থানার ওসি সোহেল আহমদ বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজটি আমাদের হাতে এসেছে। আমরা ঘাতকদের চিহ্নিত করেছি। ঘটনার পর আটককৃত তিন জনের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।’ এদিকে, ডন হাসান হত্যার ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন ডনের মা জাহেরা বেগম। মামলায় আটক তিন জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ওসি সোহেল বলেন, ‘গত শুক্রবার রাতে ঘটনার পর নাজমুল হোসেন সাজু, রাব্বি ও সাথীকে আটক করা হয়। মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। শনিবার আদালতে সাজু ও রাব্বি স্বীকারোক্তি দিয়েছে। সাথীর রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।’ ঠিক কি কারণে এই হত্যাকা- ঘটেছে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি ওসি। তিনি বলেন, ‘আদালতে যে দুজন স্বীকারোক্তি দিয়েছে, সেই কপি আমরা এখনও পাইনি। স্বীকারোক্তির কপি পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn