ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ-

গত ১৫ এপ্রিল রাত ৭ টা ৪৮ মিনিট। হঠাৎ করে আকাশের উত্তর-পশ্চিম কোণে মাত্র কয়েকবার বজ্র বিদ্যুৎ চমকায়। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে শুরু হয় প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়। একটানা আধা ঘন্টা চলে। পরে আবার থেমে থেমে রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত জগন্নাথপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে সব কিছু ল-ভন্ড হয়ে যায়। এ সময় ঘূর্ণি ঝড়ের বাতাস ও বৃষ্টির সাথে প্রচন্ড দুর্গন্ধ ছিল। পরদিন রোববার ভোররাত থেকে নদী ও হাওরে ছোট-বড় মাছসহ সব ধরণের জীব মরে ভেসে উঠে। এ রাতে মরে যাওয়া মাছ ও জীবকে পরবর্তী ৩ দিন পর্যন্ত ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। সর্বশেষ ঘটনার ৪ দিনের মাথায় মঙ্গলবার হাওরের বিষাক্ত পানি খেয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে হাঁসের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত নতুন করে মাছ বা হাঁসসহ কোন প্রাণি মরে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এর আগে ও পরে জগন্নাথপুরে আরো অনেকবার ঘূর্ণিঝড় হলেও কোন প্রকার দুর্গন্ধ পাওয়া যায়নি। এতে প্রতীয়মান হয় সেদিনের ঘূর্ণিঝড়ের সাথে কোন প্রকার ক্ষতিকর কিছু ছিল। কি ছিল তা বুঝা না গেলেও শনিবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত একটানা ৪ দিন ব্যাপী তার প্রভাব ছিল। যে কারণে পানিতে দুর্গন্ধ মাছে ও হাঁসে মড়ক দেখা দিয়েছিল।

এ ব্যাপারে সচেতন মহলের অনেকে ধারণা করে জানান, সেদিনের ঘূর্ণিঝড়ের সাথে প্রচন্ড পরিমাণ দুর্গন্ধ ছিল, এতে অবশ্যই ক্ষকিারক কোন প্রকার ভাইরাস ছিল। যার প্রভাব পরবর্তী ৪ দিন থাকে। যার প্রভাবে পানি বিষাক্ত হয়ে মাছসহ বিভিন্ন প্রাণির মড়ক দেখা দিলেও পরে আর কোন প্রভাব না থাকায় নতুন করে কোন প্রাণি মরেনি। এরপর থেকে ধীরেধীরে পানির দুর্গন্ধ কমে গিয়ে পানি স্বাভাবিক হয়ে যায়। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পরে বিভিন্ন গবেষক দল হাওরর পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। অবশেষে গবেষকরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, হাওরের পানিতে কোন প্রকার বিষক্রিয়া নেই। এতে প্রতীয়মান হয়, পানির বিষক্রিয়ার প্রভাব শেষ হওয়ার পর গবেষকরা পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। যে কারণে পানিতে কোন প্রকার বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে স্থানীয়রা আরো জানান, সেদিনের ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তির স্থান সঠিকভাবে নির্ধারণ ও ঘূর্ণিঝড়ের সাথে বয়ে যাওয়া বাতাস ও বৃষ্টি যদি কোন আবহাওয়া অধিদপ্তর রেকর্ড বা সংরক্ষণ করে রাখে, তাহলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে হয়তো সেদিনের ঘূর্ণিঝড়ে সাথে কি ছিল তা বেড়িয়ে আসতে পারে। তাই এ বিষয়গুলোকে সামনে রেখে যদি নতুন করে গবেষকরা গবেষণা করেন, তা হলে হয়তো ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সচেতন মহলের অনেকে মনে করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn