মৃত্যুকে মুঠোয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে, জীবন বাজি রেখে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন। নিজে কী পেলেন না পেলেন বা স্বীকৃতি বড় বিষয় নয়। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজে সততার সঙ্গে দেশ চালাতে চেষ্টা করছি। একটি কথা মনে রাখবেন, মাথায় পচন ধরলে সবখানেই পচন ধরে। যেহেতু মাথায় পচন নেই, শরীরের কোথাও একটু-আধটু ঘা-টা থাকে, সেগুলো আমরা সেরে ফেলতে পারব।’ সম্পূরক প্রশ্নে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস নামের একটি সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের তৃতীয় সৎ ও পরিচ্ছন্ন সরকারপ্রধান। তিনি বিশ্বে চতুর্থ কর্মঠ সরকারপ্রধান। তবে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কিছু অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনুভূতি জানতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার অনুভূতি এটাই, কী পেলাম, কী পেলাম না, সে হিসাব মেলাতে আমি আসিনি। কে আমাকে রিকগনাইজ করল, করল না, সে হিসাব আমার নাই। একটাই হিসাব, এই বাংলাদেশের মানুষ, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে কিছু কাজ করতে পারলাম কি না, সেটাই আমার কাছে বড়।’
শেখ হাসিনা বলেন, অন্য যেসব সরকারপ্রধানের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, তাদের জনসংখ্যা আর বাংলাদেশের জনসংখ্যা তুলনা করা হলে হয়তো হিসাবটা অন্য রকম হতো। তিনি বলেন, তাঁকে বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। গ্রেনেড হামলার শিকার হতে হয়েছে, জেলজুলুম, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বিদেশে শরণার্থী হয়ে থাকতে হয়েছে। যাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, তাঁদের এই অভিজ্ঞতাও নেই। এ বিষয়গুলোও বিবেচনায় নেওয়া হলে ফল অন্য রকম হতে পারত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমনও দিন যায়, কাজের চাপে রাতে তিন ঘণ্টা সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারেন না। তিনি কাজ করেন মনের টানে। কারণ, তিনি তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চান। দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দেশে স্বৈরশাসন চলে, গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা জবাবদিহির অভাব থাকে, সে দেশে দুর্নীতির শিকড় গেড়ে যায়। সে শিকড় উপড়ে ফেলা কঠিন হয়ে যায়। ১৯৭৫-এর পর থেকে ২৫ বছর দেশে এ অবস্থা ছিল। বর্তমান সরকার উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে স্বৈরশাসন, সেনাশাসন, অবিচার, অত্যাচার। যার কারণে এখনো দুর্নামের ভাগীদার হতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই রকম দুর্নীতি হলে দেশের জিডিপি ৭ দশমিক ২৮ ভাগ হতো না। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ ডলারে উন্নীত হতো না।