ইমানুজ্জামান মহীঃ সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগে নতুন মেরুকরনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতা ও জেলার দলীয় সাংসদদের মাঝে যে মতবেদ ছিল তা অনেকটা কমে এসেছে। নীতিগত ভাবে তারা একে অপরের এখন বেশ কাছে চলে এসেছেন। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান ও সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম,এনামূল কবীর ইমন দু’জনই ‘সুনামগঞ্জ বার্তা’ অনলাইনের প্রতিনিধির সাথে খোলামেলা আলোচনায় একথা স্বীকার করেন।

আগামী সালের আসন্ন সাধারন নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার শীর্ষ নেতারা নিজেদের মধ্যের অতীতের সকল ভেদাভেদ ভুলে একহতে চাইছেন। নানা কারনে অতীতে নিজেদের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল তা তারা মিটিয়ে ফেলতে চাইছেন। আগামী ২৫ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যে অন্তর্ভুক্ত করায় সরকারিভাবে সুনামগঞ্জে যে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ করার উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছে সে ‘ শোভাযাত্রা’ থেকে তারা তাদের ঐক্যের জানান দিতে চান। আজ বৃহষ্প্রতিবার দলের জেলা সভাপতি ও সম্পাদক দু’জন একই ফ্লাইটে ঢাকা থেকে প্রথমে সিলেট এবং পরে সুনামগঞ্জ আসছেন। সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নূরুল হুদা মুকুটও তাদের সাথে আসার কথা রয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলার সকল সাংসদ , জেলা আওয়ামীলীগ, জেলা যুবলীগ, জেলা ছাত্রলীগ ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠন নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে তারা সরকারী ভাবে পালিত এই ‘শোভাযাত্রা’ অনুষ্টানে যোগ দিতে চান।

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বলেন, নানা ইস্যুতে আমাদের মধ্যে অতীতে যে দূরত্ব তৈরী হয়েছিল আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আমরা তা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। আগামী সাধারন নির্বাচনে সুনামগঞ্জের ৫টি সংসদিয় আসন আমরা নেত্রীকে উপহার দিতে চাই। নির্বাচনে জয়লাভ করতে হলে আগে দলকে শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে হবে। তিনি বলেন, জেলা কমিটি নিয়ে আমি এবং জেলা সম্পাদকের যে মতবিরোধ ছিল তা অনেকটা কমে এসেছে। ঐক্যমতের ভিত্তিতে অচিরেই আমরা শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে আসতে পারবো। তিনি বলেন, দলের মধ্যে যারা দলাদলি, গ্রুপিং সৃষ্টি করে। যারা নিজেকে আওয়ামীলীগ বলে পরিচয় দেয় অথচ নৌকায় ভোট দেয়না। যারা ব্যক্তি স্বার্থের জন্য দলের বিরুদ্ধে গিয়ে জামাত শিবিরের সাথে আতাৎ করে কমিটিতে সেই সব কুচক্রীদের স্থান হবেনা।

সাধারন সম্পাদক ইমন বলেন, দলের মধ্যে ঐক্যের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। যারা দলে গ্রুপিং জিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন তারা চিহ্নিত হয়েগেছে্ন। দলের নেতাকর্মীরা এদেরকে চিহ্নিত করতে পেরেছে। সিনিয়রকে যারা সম্মান দিতে জানেনা , দলের মধ্যে থেকে যারা দলের নেতাদের অসম্মান করে তাদেরকে দিয়ে আর যাই হোক দলের মঙ্গল হয় না। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেই আমরা যাতে সবার সম্মতিতে শক্তিশালী একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ঘোষণা করতে পারি সে লক্ষ্যে মতবেদ ভুলে কাজ করছি। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে জেলা যুবলীগ, জেলা ছাত্রলীগ সহ অন্য অঙ্গসংগঠন গুলোকেও শক্তিশালী করতে চাই। এ লক্ষ্যে আমরা জেলার সকল সাংসদকে নিয়ে এক সাথে চলতে চাই। দলের জেলা সভাপতি এব্যাপারে খুবই আন্তরীক। বিগত কয়েক দিনে উনার সাথে আমার কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। সাংসদদের সাথেও জেলা সভাপতি ফোনে আলাপ করেছেন। কয়েক দিনের ভেতর আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে এক সাথে বসবো।

তিনি বলেন, গ্রুপিং এবং দলাদলির রাজনীতি আমাদের নেত্রী পছন্দ করেন না। দলাদলিতে নির্বাচনে নিজের দলের ক্ষতি হয় । এ জিনিষটা সবাইকে বুঝতে হবে । সত্যিকারে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক দলের কোন ক্ষতি হোক তা কখনো চাইবেনা। ব্যক্তির চেয়ে দল বড় প্রতিটি কর্মীকে তাই মনে রাখতে হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn