সু’বার্তা ডেক্স -ভারতে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করলো নির্বাচন কমিশন। আজ থেকেই কার্যকর হয়ে গেল নির্বাচনী আচরণবিধি। অর্থাৎ গোটা দেশের আইনশৃঙ্খলার ভার চলে গেল নির্বাচন কমিশনের হাতে। ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির নিয়ন্ত্রণও ভোটপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলে যাবে কমিশনের হাতে। কেন্দ্রের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার আর কোনও জনকল্যাণমুখী প্রকল্প ঘোষণা করতে পারবে না। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানালেন- সাত দফায় দেশের ৫৪৩ আসনে লোকসভা নির্বাচন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৫ এপ্রিল। তা যাচাইবাছাই হবে ২৬ এপ্রিল। মনোনয়ন তুলে নেওয়ার শেষ দিন ২৯ এপ্রিল। ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবরকম বন্দোবস্ত করছে নির্বাচন কমিশন। রাজীব কুমার জানিয়েছেন, ভোটে যতদূর সম্ভব কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হবে। মোট ২১০০ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। তারাই বাহিনী নিয়োগ করবেন। কোনও রাজ্যেই কোনও চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সোশাল মিডিয়া, টেলিভিশনে নজর রাখা হবে। সংবাদমাধ্যমকেও কড়া নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করা যাবে না। ফেক নিউজ তৈরি করা যাবে না। কোনও বিজ্ঞাপন হলে, তা জানিয়ে দিতে হবে। অনিয়মের অভিযোগ পেলে অ্যাপের মাধ্যমে ১০০ মিনিটের মধ্যে সমাধান করা হবে। রাজ্যের হাতে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিলিট করার ক্ষমতা দিল নির্বাচন কমিশন। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কোনওভাবে শিশুদের ব্যবহার করা যাবে না- কড়া নির্দেশ কমিশনের। প্রত্যেক তারকা প্রচারণায় নামলে তাকেও নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইনের নোটিস দিতে হবে। ইস্যু ভিত্তিক প্রচার হোক, কিন্তু ঘৃণামূলক মন্তব্য, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আক্রমণ করা চলবে না। ৫৩৭ দলকে এবারের নির্বাচন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এরা প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিত। অন্য দলের গাড়ি ব্যবহার করত। এমন দল-কে এবার নির্বাচন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আর্থিক লেনদেনের ডিজিটাল রেকর্ড থাকবে কমিশনের কাছে। কোনও বিনামূল্যে উপহার দেওয়া চলবে না। টাকা, মদ, শাড়ি, প্রেসার কুকারের মতো জিনিস দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করলেই কড়া পদক্ষেপ। জিএসটি-র মাধ্যমে নজর রাখা হবে যে কোনও পণ্যের হঠাৎ চাহিদা বাড়ছে কি না। বিমানবন্দরে কড়া নজরদারি চালানো হবে। যে রাজ্যে হেলিকপ্টার অবতরণ  করে, সেখানেও চেকিং হবে। রেল ও সড়কপথেও কড়া নজরদারি চালানো হবে।নির্বাচনে হিংসার কোনও জায়গা নেই। লোকসভা নির্বাচনে যেন রক্তগঙ্গা না বয়, তা নিয়ে কড়া সতর্কবার্তা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের। অভিযোগ পেলেই কড়া ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে জেলাশাসকদের।প্রার্থীর অপরাধের ইতিহাস বা ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে, তাঁকে তিনবার সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। রাজনৈতিক দলকেও জানাতে হবে, কেন অপরাধের ইতিহাস থাকা কাউকে প্রার্থী করা হল, অন্য কেউ কেন প্রার্থী হলেন না।

এবারে নারী ভোটার বৃদ্ধি পেয়েছে ৯৭ শতাংশ। ১২টি রাজ্যে পুরুষ ভোটারের তুলনায় নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। এ মুহূর্তে দেশে প্রায় ৯৬ কোটি ৮০ লাখ ভোটার রয়েছেন। নতুন ভোটার প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ। যুব ভোটারের (২০-২৯ বছর বয়সি) সংখ্যা ১৯.৭৪ কোটি। এবার ৮৫ বছরের বেশি বয়সি ভোটারের সংখ্যা ৮২ লক্ষ। মোট পুরুষ ভোটার ৪৯ কোটি ৭০ লাখ। এ বছর নারী  ভোটার ৪৭ কোটি ১০ লাখ। তৃতীয় লিঙ্গ বা ট্রান্সজেন্ডার ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ। এ বছর নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে ৫৫ লক্ষ। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানালেন বিহার, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটক, তামিলনাড়ুতে উপনির্বাচন হবে। লোকসভার সঙ্গেই সেই উপনির্বাচন হবে। সিকিম, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ- চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে লোকসভার সঙ্গে।  

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn