বিচিত্রার সেই শামীম আজাদের কথা
সত্তরের শেষার্ধ থেকে আশির পুরোটা দশক আমি যেভাবে যে বিষয় দেখেছি, লিখেছি তখন ঢাকার কোনো পুরুষ সহকর্মীরা তার খুব কমই করেছেন। পারেননি। কারণ হয়তোবা, ছোটবেলা থেকে গৃহ জীবণের ওই সব অভিজ্ঞতা তাকে ছেলে বলেই কেউ দেয়নি। ত্রুন সময়ে প্রতি মাসে ঋতুমতি হয়ে তাকে নিজেকে অচ্ছুত ভাবতে হয়নি। সন্তান জন্ম দেয়ার মত চূড়ান্ত এক সাহসী কাজের কোনো অভিজ্ঞতাই তার হয় না। এমনকি আজ অবধি বাংলাদেশি খুব নগন্য সংখ্যক পুরুষই আছেন, যারা তার স্ত্রীর প্রসবকালে সামনে থেকে সে প্রক্রিয়া ও কষ্টটুকু প্রত্যক্ষ করেছেন। তাই পুরুষ সাংবাদিকগণ নারী বিষয় নিয়ে লিখলেও তাদের দৃষ্টিভঙ্গীতেই তা তুলে এনেছেন যা কিনা কখনোই সাংবাদিক- নারীর সমকক্ষ হয় নি। সেখানে নারী এগিয়ে। তাহলে এ ব্যাপারটা দাঁড়ালো এই যে, অভিজ্ঞতা, অভ্যাস, অধ্যাবসায় ও সুযোগ থাকলে সব বিদ্যেই সবাই আয়ত্ব করতে পারলেও কয়েকটি বিষয় চাইলেও পুরুষরা পারবেন না। শাচৌ ব্যাপারটা বুঝতেন। শক্তি কারো কোন কম নেই। আছে তার ভিন্নতা। কিন্তু বাইরের সমাজে তার মূল্যায়ন হত ভিন্ন।নায্যতা পেত না। আমি মনে করি মানুষের কাজের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি হওয়া সমীচীন- সে কাজটি কে করেছে এবং কি করেছে তার বিবেচনায়। মূল্যায়নের সময় মনে রাখতে হবে তার জৈব উপলব্ধি ও তার অর্জন, তার শক্তি। দৃশ্যমান সংগতি বা সামাজিক সুযোগের কারনে মোকাবিলার শক্তির কাহিনী কেবল পুরষ্কৃত হতে পারে না। এ বড় অনায্য কথা। এ আমাদের সময়ে হয়েছে। এখন তা নবরূপে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে ঠিক তেমনি। বড়ই বেদনার বিষয়। বড়ই বেদনার বিষয়। লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক