মেহের আফরোজ শাওন(ফেসবুক পেইজ থেকে)

সকাল সকাল ফ্লাইট সব সময় কষ্টকর… ৮.২৫ এর ফ্লাইট মানে ভোরে ওঠার টেনশনে সারারাত না ঘুমানো…, তারপর শেষ রাতের দিকে ঘুমে পাগল চোখগুলোকে টেনে খুলে রাখার চেষ্টা… (অন্যান্য দিন যদিও অনেক আদর করেও ঘুম বাবাজিকে বাসায় আনা যায় না…) এরপর আছে ধানমন্ডির স্কুলসমূহের অবর্ণনীয় ট্রাফিক জ্যাম… তারপরেও ঠিক সময়ে রওনা হলাম… গাড়িতে উঠেই মনে হলো বাচ্চা দুইটাকে আরেকবার জড়িয়ে ধরি… ফিরে গেলাম বাসায়.., ট্যানটা ঘ্যাংগার কাছে নানান উপদেশ শুনে গাড়ি ছাড়লাম এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে… গলির মাথায় যেতেই মনে পড়লো wallet টা কি এনেছি..! উহু… গাড়ি ঘোরাও… এবার নিশ্চিতভাবে সবকিছু দেখে নিয়ে ড্রাইভারকে গাড়ি ছাড়তে বললাম… মহাখালী ফ্লাইওভারের কাছাকাছি ট্রাফিক সিগনালে বসে ভাবলাম ‘হাতে যেহেতু সময় আছে ইমিগ্রেশন কার্ডটা পূরণ করে কাজ এগিয়ে রাখি…’

হাতব্যাগ থেকে পাসপোর্ট বের করে তো আমার মাথায় বজ্রপাত..! অতি যত্ন করে আমি আমার date expired পাসপোর্ট নিয়ে রওনা হয়েছি..! ঘড়িতে বাজে ৬.৪৩… ঐদিকে আমার দুই সহযাত্রী (পিতাজি এবং আম্মাজান) চেক ইন করে ফেলেছেন… হুইলচেয়ারে বসা আমার আম্মাজান প্রতি ৫ মিনিটে একবার ফোন করে আমি কতদূর সেই খবর নিচ্ছেন আর বলছেন— “তোমরা শুধু শুধু আমাকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাচ্ছ… সিঙ্গাপুরের ডাক্তার গুলে খাওয়ালেও আমি মনে হয় আর উঠে দাঁড়াতে পারব না…”  কিভাবে যে আবার বাসায় গেলাম, লিফট আসার তোয়াক্কা না করে দৌড়ে ৬তলায় উঠলাম আর কিভাবে যে ৭.৩৩ এর মধ্যে এয়ারপোর্ট পৌঁছলাম, এখনো বুঝে উঠতে পারছি না..!

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn