ফসল হারা কৃষকের এখন দাবী একটাই দূর্গত এলাকা ঘোষনার
সুনামগঞ্জের বাঁধ নির্মানে অনিয়মের কারনে একের পর এক হাওর ডুবে যাওয়ায় প্রতিদিন জেলার প্রতিটি উপজেলায় বিক্ষোব মিছিল,মানববন্ধ ও সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দিচ্ছে সর্বস্তরের জনসাধারন এমপি,মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কৃতৃপক্ষের কাছে স্মারকলীপি আর একটাই দাবী উঠেছে বাঁধ নির্মানে অনিয়মে দুশিদের শাস্তি ও হাওর সমৃদ্ধ জেলাকে দূর্গত এলাকা ঘোষনার। জেলার ১১টি উপজেলায় প্রতিদিনেই বিক্ষোব মিছিল,মানববন্ধ ও সমাবেশ করে ক্ষোব ঝাড়চ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক,সাংস্কৃতিক,বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সহ সর্বস্থরের জনসাধারন। গত ২সাপ্তাহ ধরেই জেলার প্রতিটি হাওর রক্ষায় সেচ্ছ শ্রমে কাজ করছে নিজ নিজ এলাকার উপজেলা চেয়ারম্যান,ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বার সহ হাওর পাড়ের কৃষক সহ সর্বস্থরের জনসাধারন। হাওরে পাওয়া যায় নি পাউবো কে। হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মানে অনিয়মের কারনে বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানির চাপে জেলার একের পর বাঁধ ভেঙ্গে নিমিষের মধ্যেই ৩৫টির অধিক হাওরের সম্পুর্ণ কাঁচা,আধা পাকা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। অন্য সব বছরের তুলনায় এবার রেকর্ড ছাড়িয়েছে ক্ষতির পরিমান। সরকারী হিসাবে ক্ষতির পরিমান ১লাখ হেক্টরে অধিক হলেও বেসরকারী ভাবে দ্বিগুন হবে জানান হাওর পাড়ের কৃষকগন। জমিতে উৎপাদিত বোরো ধানের ক্ষতির পরিমান প্রায় ২হাজার কোটি টাকার বেশি। আর এই হাওরের সাথে জরিত জেলার ১৫লক্ষাধিক কৃষক পরিবার চরম ক্ষতির শিকার হয়েছে। এখন হাওর পাড়ের কৃষক পরিবার গুলোর ঘরে ভাত নেই,আছে বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের তাকদার চাপ। কৃষকদের পিঠ এখন ঠেকেছে দেয়ালে। কৃষকেরা গোয়ালের গরুকে নিজের সন্তানের মতোই আদর করে পালন করেছে। সেই গরু নিয়ে এখন পড়েছে বিপাকে। একমাত্র বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সব হারিয়ে এখন গো-খাদ্য সংকট আর পরিবারের আর্থিক অনটন তাড়াতে শেষ সম্ভল চাষাবাদের কাজে ব্যবহ্নত গরু বেঁচে দিতে হচ্ছে পানির দামে। ধান গেছে পানিতে এবার গরু হারানোর কষ্টে কৃষক পরিবার গুলো চোখের জল ফেলছে। তাই সুনামগঞ্জ জেলাকে দূর্গত এলাকা হিসাবে ঘোষনা করার দাবী উঠেছে সর্বত্র। সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়-জেলার ১১টি উপজেলার ৪৬টি হাওরে আবাদী জমির পরিমান ৩,৭৯,২১৬ হেক্টর। এবার আবাদ করা জমির পরিমান-২,৭৬,৪৪৭ হেক্টর। তার মধ্যে প্রায় ২ লাখ ২৩হাজার ৮৫হেক্টরের অধিক জমিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ১৫ লাখ কৃষক বোরো ধানের আবাদ করেছে। আর বাকি জমিতে অন্যান্য ফসল। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯লাখ মেট্রিকটনের অধিক। যার মুল্য দুই হাজার ৬৩৪ কোটি টাকার বেশি। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান,সঠিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থদের মাঝে চাল,ঢেউটিন ও নগত টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় চাল,ডাল,আটা সহ বিভিন্ন পন্য সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি এবং তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।