পুলিশ ও নির্যাতিত শওকতের পরিবারের সদস্যরা জানান- শহরের দক্ষিণ পৈরতলার অশ্রু নামের একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রের মালিক শওকতের সঙ্গে পলির ৯ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। পলি শওকতের দ্বিতীয় স্ত্রী। পলিরও আগে বিয়ে হয়েছিল। শহরের কলেজপাড়ার বাসিন্দা জেলা ছাত্রলীগের এক নেতার সঙ্গে প্রথম বিয়ে হয়েছিল তার। সেই স্বামীকেও নির্যাতন করার কারণে ঘর ভাঙ্গে। মাদক নিরাময় কেন্দ্র অশ্রুর কর্মকর্তা লিমন জানান- গত ১৩ই মার্চ শওকতকে কৌশলে মধ্যপাড়ার বাসায় নিয়ে যায় পলি। বাসা থেকে সে নুডলস রান্না করে নিয়ে ওই কেন্দ্রে আসে। এই নুডলস খাওয়ার পর আমরা সবাই (৩ জন) বাসায় গিয়ে দ্রুত ঘুমে অচেতন হই। নুডলস খাইয়ে সে শওকতকে সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় যাওয়ার পর সে ঘুমিয়ে পড়লে অপহরণকারীদের সহায়তায় তার হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে খাটের নিচে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে পরদিন পলির মধ্যপাড়া বাসায় গিয়ে শওকতকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আমরা উদ্ধার করি। এ ঘটনার পরই আমরা সামাজিকভাবে বসে পলিকে  নগদ ৩ লাখ টাকা দিয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দিই। এরপর গতকাল কয়েকজন অপহরণকারী পৈরতলায় আমাদের মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সামনে এসে শওকতকে অপহরণ করার জন্য ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তখন আমরা তাদের আটক করি। আটককৃতরা হচ্ছে নবীনগরের উত্তর লক্ষ্মীপুরের সুরুজ মিয়ার ছেলে সানাউল্লাহ (২৯), একই উপজেলার শ্রীরামপুরের ইসমাইল মিয়ার ছেলে গনি মিয়া (২৫), নাসিরনগরের গোকর্ন গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে শামীম মিয়া (২৫) ও সদরের সুহিলপুরের মধ্যপাড়ার মৃত মুরতুজ আলীর ছেলে লোকমান মিয়া (৫৬)। সদর থানার এসআই আশরাফ সিদ্দিকী জানান- খবর পেয়ে তিনি ও এসআই রুবেল ফরাজীর নেতৃত্বে পুলিশের ৩টি টিম মধ্যপাড়া ও দক্ষিণ পৈরতলা গিয়ে পলি ও ৪ অপহরণকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। তিনি আরো জানান অপহরণকারী সংখ্যায় ১০ জন ছিল। সদর থানায় ডিউটি অফিসারের কক্ষে বসা পলি সাংবাদিকদের জানান- তার সঙ্গে স্বামীর বিরোধের কাহিনী অনেক লম্বা। গত ৬ মাস ধরে শওকতের অত্যাচার বেড়েছিল অনেক। নেশা করে বাসায় এসে আমারে মারতাছে-কাটতাছে। ঘরের জিনিসপত্র ভাঙ্গতাছে। এমনকি বাসার মালিককেও কোপাইতে যায়। আমিও মানুষ। এসব কারণে রাগে তাকে বাঁধার সিদ্ধান্ত নিই। যাদের আটক করা হয়েছে তাদের কোনো দোষ নাই। পলির পিতা রফিকুল ইসলাম বলেন স্বামী তার মেয়েকে নির্যাতন করতো এটা ঠিক। তবে আমার মেয়ে এই কাজটা অন্যায় করেছে। শওকতের পরিবারের লোকজন জানান-পলি শওকতের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ও প্রায় ৫০ ভরির মতো স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেয় বিয়ের পর। এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মঈনুর রহমান বলেন- স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার মীমাংসা হয়ে যাবে। তবে অন্য যাদের ধরে আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।মানবজমিন

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn