শহীদ নুর আহমেদ, সুনামগঞ্জ :: ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ বাঙ্গালী জাতিসত্ত্বার স্বাধীকার আন্দোলনের গৌরবের নাম। সার্বভৌমত্ব গর্বের ঐতিহাসিক নিদর্শনের মধ্যে শহীদ মিনার, স্মৃতি সৌধ, মুক্তিযুদ্ধ স্মতিফলক অন্যতম।  নতুন প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলন আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে শহীদ মিনার বা স্মৃতি সৌধ।  সরকারি বরাদ্দ বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে এটির সৌন্দয্যবর্ধন বা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের অর্ধশত বর্ষী বীরগাঁও ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ঘটছে এর উল্টো।  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষা ব্যবস্থার মানউন্নয়ন ঘটলেও মান্দাতা আমলে তিনটি খাম্বা দিয়ে নির্মিত জরাজির্ণ্য শহীদ মিনারটির উন্নয়ন করতে দেখা যায়নি । ভাঙ্গা অবস্থায় ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে নির্মাণের পর থেকে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে একটি দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি উঠে আসলেও এ ক্ষেত্রে উদাসীন সংশ্লিষ্টরা।  তাই অবহেলা আর অযতনে আঙ্গিনা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে ভঙ্গুর শহীদ মিনারটি। যেকোনো দিন ভেঙ্গে পড়তে পারে। শহীদ মিনারটির এমন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল।  তারা জানিয়েছেন প্রতিবছর বিদ্যালয়ে আয় হয়। সরকারি বরাদ্দে উচ্চ ভবন নির্মাণ হয়েছে।  অবকাঠামোগত উন্নয়ন খাতে প্রচুর টাকা ব্যয় করা হলেও শহীদ মিনারটি উন্নয়নে কেউ এগিয়ে আসছেন না। ইউনিয়নের একমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারের করুন দশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।  তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করলে একটি দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার নির্মাণে দায়িত্ব নিতে চান বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্ররা।
বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র বাবরুল হোসেন নাহিদ বলেন, দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে বিদ্যালয়টি এলাকার শিক্ষাঙ্গনে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নসহ শিক্ষা ব্যবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে অথচ বিদ্যালয়টি শহীদ মিনারটির করুন অবস্থা। শিক্ষার্থী ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে শহীদ মিনার অন্যতম ভূমিকা রাখে। আমর দীর্ঘদিন ধরে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দিয়ে আসছি। কোনো কাজ হচ্ছে না। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সহযোগিতা করেন তাহলে আমরা  একটি দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার নির্মাণের দায়িত্ব নিতে চাই।  এ ব্যাপারে বীরগাঁও ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজ মিয়া বলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য এক লক্ষ টাকা দেয়ার কথা বলছিলে কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে তা পাইনি আমরা। শহীদ মিনার নির্মাণের জন্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী মহোদ্বয়ের ডিও লেটার নিয়ে উপজেলা কর্মকর্তার কাছে গিয়ে ছিলাম কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় সম্ভব হয়নি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn