ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে আজীবন অর্থ দিয়ে যাবে না। শুক্রবার একটি রেডিও স্টেশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই হুঁশিয়ারি বার্তা উচ্চারণ করেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে দেখলে ইউক্রেন নামে কোনো দেশের অস্তিত্বই নেই। অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে ইউক্রেনের যে পতন দেখা যাচ্ছে তা ব্যাপক। যেহেতু সেখানে যুদ্ধ চলছে, এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। অবশ্যই, ইউক্রেনের নিজের ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা নেই।

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন ইউক্রেনীয়দের স্যালারি দিচ্ছে, পেনশন দিচ্ছে, স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করে চলেছে তারা। কিন্তু আজীবন এমনটা চলতে পারে না। পশ্চিমাদের উদ্দেশ্যে ওরবান প্রশ্ন করেন, তারা কি ইউক্রেনকে এভাবেই চলতে দেখতে চায়? আমেরিকা ও ইউরোপ যেদিন এই প্রশ্নের উত্তরে ‘না’ বলবে, সেদিনই এই যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে হাঙ্গেরিও ইউক্রেনকে অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। যদিও হাঙ্গেরির সাধারণ মানুষের মধ্যে ইউক্রেনবিরোধী মনোভাব বেশ জোরালো। ইউক্রেনের ট্রান্সকারপাথিয়া অঞ্চল থেকে প্রচুর মানুষকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠাচ্ছেন ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার। এ অঞ্চলের মানুষেরা ঐতিহাসিকভাবে হাঙ্গেরিয়ান। ফলে টার্গেট করে হাঙ্গেরীয়দের নির্মূলের অভিযোগ উঠেছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে।

ওরবান এর আগে দাবি করেছিলেন যে, হাঙ্গেরিয়ান সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে ইউক্রেন। ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেন, হাঙ্গেরির প্রতীককে ট্রান্সকারপাথিয়া থেকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। হাঙ্গেরিয়ান ভাষা শিক্ষার স্কুলগুলোর প্রধানদের সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আর এখন অনেক জাতিগত হাঙ্গেরিয়ানদের ফ্রন্টলাইনে গিয়ে প্রাণ দিতে হচ্ছে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করলে অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে পশ্চিমাদের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করতে শুরু করে দেশটি। শুধুমাত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নই ইউক্রেনকে ৫৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা করেছে এই অল্প সময়ের মধ্যে। হাঙ্গেরিও ইউক্রেনে মানবিক সাহায্য পাঠিয়েছে। তবে দেশটি ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। হাঙ্গেরি প্রথম থেকেই একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়ে আসছে। মস্কোর বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞারও সমালোচনা করেছে দেশটি। হাঙ্গেরির দাবি, এই নিষেধাজ্ঞা ব্যর্থ হবে এবং রাশিয়ার থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নেরই ক্ষতি বেশি করবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn