আমি শাসক নয় সেবক হতে এসেছি। সেবক হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছি, কারণ, পিতার কাছে সেটাই শিখেছি। তার যে স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুধার হাত থেকে মুক্তি পাবে, শিক্ষা পাবে সেসব কথা সবসময় বলতেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ঘরের শত্রু বিভীষণরাই সমস্যা। এদেশের মাটি এতই ঊর্বর যে, ক্ষেতভরা ফসলও হয়, আগাছা পরগাছাও জন্মে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলে তাদের মনবেদনা হচ্ছে । যখন আমরা দেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে সবধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি, যখন দেশটা এগিয়ে যায় তখনই যেন অন্তর্জালা শুরু হয় তাদের।’ বিএনপি-জামায়াত গণহত্যা দিবস পালন না করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত প্রমাণ করে দিয়েছে তারা এখনও আলবদর, আল শামসদের সঙ্গেই আছে। যারা মুক্তিযুদ্ধে শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তাদের পাশে তারা নেই। যারা গণহত্যা দিবস পালন করে না, যারা খুনিদের ক্ষমতায় বসায় তারা এদেশের মানুষের মঙ্গল কামনা করে না, এটা মনে রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ এবং বাঙালির বঞ্চনার ইতিহাস যেন না জানতে পারে পঁচাত্তরের পর সেভাবেই ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। পঁচাত্তরের পর ২১ বছর তারা মিথ্যা বয়ান গেয়ে গেছে।’ কে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলো তা নিয়ে আলোচনার দরকার নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনার দরকার নেই এ কারণে যে, মানুষের কাছে সত্য স্পষ্ট। হাইকোর্ট রায় দিয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যে বিতর্ক, সেটা উচ্চ আদালতই সমাধান করে দিয়েছে। রায় যারা মানে না, তাদের উদ্দেশ্যটা কি।’

তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। নতুন প্রজন্ম সেই বিকৃত ইতিহাস পড়ে বড় হয়। ১৯৯৬ সালে এসে প্রকৃতটা জানতে শুরু করে। মাঝখানে আবারও খারাপ সময় গেছে। আমরা যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসলাম তখন থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকৃত কথা জানা যাচ্ছে।’ প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে প্রযুক্তির যুগে সঠিক বিষয়টি জানা যায়। বাংলাদেশের ইতিহাস আন্তর্জাতিক টেলিভিশনের আর্কাইভে গিয়ে তথ্য সংগ্রহেরও সুযোগ আছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন,  ‘ক্ষুধার্ত মানুষকে দেখিয়ে নিজেদের ভাগ্য তৈরি করেছে। বিলাস ব্যাসনে টাকার কথা চিন্তা করেছে। দরিদ্র, খেট খাওয়া ভূমিহীন মানুষের কথা চিন্তা করবার ক্ষমতা তাদের ছিল না।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আসলে উন্নতি হয় কারণ, আমরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে আসি না, জনগণের ভাগ্য গড়তে আসি। সারাবিশ্ব বাংলাদেশকে বলে উন্নয়নের রোল মডেল। যখন সরকার গঠন করি সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা কিন্তু আমরা প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগে ধরে রেখেছিলাম, কাউকে একটু বুঝতে দেইনি। সেটা এখন ৭ এর ওপরে পৌঁছেছে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn