দুর্নীতির দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিগত ১৫ মাস কারাগারে আছেন। তার মু্ক্তি নিয়ে দলীয় আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছে মতপার্থক্য। একপক্ষ বলছে, সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া মুক্তি সম্ভব নয়। অন্যপক্ষ বলছে, আইনি প্রক্রিয়ায় ঈদের আগেই মুক্তি পাবেন খালেদা জিয়া। মুক্তি পেতে দরকার শুধু ৪ মামলায় জামিন। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৩টিতে তিনি জামিনে রয়েছেন। বাকি ৪টিতে জামিন পেলে মুক্তি পেতে পারেন তিনি। এমনটাই বলছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, ৪টি মামলায় জামিন হলেই মুক্তি মিলবে খালেদা জিয়ার। জয়নুল আবেদীন জানান, আমরা অধিকাংশ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন করিয়েছি। ২টি মামলায় এখন তার জামিন বাকি আছে। আর অন্য যে দু’টি মামলার জামিন বাকি আছে সেগুলো জামিন যোগ্য হওয়ায় আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দেইনি। এখন দেশের সর্বোচ্চ আদালত যদি বিচারিক মনোভাব নিয়ে মামলাগুলো দেখেন তাহলে খুব দ্রুতই আমরা এই মামলাগুলো থেকে জামিন পাব। অন্যদিকে সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া খালেদা জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন, সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি মনে করেন, আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত হবেন এটা একটা অবাস্তব কথা। কেননা, বর্তমানে আমাদের দেশে বিচার ব্যবস্থার যে অবস্থা তাতে, যে পর্যন্ত না সরকারের সদিচ্ছা হবে তাকে মুক্তি দেয়া। ততদিন পর্যন্ত তিনি জামিন পাবেন না।

খন্দকার মাহবুব বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার একটি মামলায় জামিন নেব। পরে, তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করা হবে। এভাবেই তার কারাজীবন দীর্ঘায়িত করা হবে। এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রহর গুনছি। আশা করছি, তিনি শিগগিরই আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি পাবেন। তবে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ বলছেন, আইনি লড়াই ছাড়া খালেদা জিয়াকে মুক্তি পেতে হলে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ৫ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। পরে আপিলে এই মামলায় খালেদা জিয়ার ১০ বছর কারাদণ্ড হয়। একই বছর ২৯শে অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এছাড়া ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn