পদ্মাসেতুর উদ্বোধন পিছিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যকে নাচক করেছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি নিশ্চিত, নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ চলতি বছরেই শেষ হবে বহুল প্রতীক্ষিত সেতুটির নির্মাণ কাজ। রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেতু মন্ত্রী এ কথা বলেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সেতুর উদ্বোধন পিছিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, নিজেদের অর্থে নির্মাণাধীন পদ্মাসেতু আগামী ২০১৯ সালের জুনে উদ্বোধন হবে। তবে যান চলাচল মার্চ মাস থেকেই শুরু হতে পারে। যদিও এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি সংসদে এবং পরের দিন মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে গিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা জানান কাদের। সচিবালয়ে সেতুমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল আসলেই কি পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে? কার কথা ঠিক? অর্থমন্ত্রীর নাকি তার। জবাবে কাদের বলেন, অর্থমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটা সঠিক নয়। উনি তো সেতুমন্ত্রী নয়। আমি সেতুমন্ত্রী, বিষয়টা আমাদেরকে দেখতে হবে। নির্ধারিত সময়ে সেতুর কাজ শেষ হবে জানিয়ে কাদের বলেন, আমরা কাজের বেশকিছু জটিলতা পার হয়ে এসেছি। এভাবে পদ্মা সেতুর কাজ চলতে থাকলে আমাদের টাগেট অনুযায়ী সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর মূল সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের দিনই ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই সেতু চালুর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুটি পিলারের ওপর একটি স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে নদীর বুকে সেতুর ১৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়। মোট ৪২টি পিলারে এ রকম ৪১ স্প্যান বসার কথা রয়েছে। আর প্রথম স্প্যানটি বসানোর দিন প্রতি মাসে একটি করে স্প্যান বসানোর কথা হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় পরের স্প্যানটি বসতে সময় লেগে যায় প্রায় চার মাস। গত ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান বসার মধ্য দিয়ে সেতুর ৩০০ মিটার এখন দৃশ্যমান হয়েছে। পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ সময় মতো হবে কি না, এই প্রশ্ন উঠেছে নদীর বুকে মাটির নিচের গঠনগত জটিলতার কারণে। বেশ কিছু পিলার বসানোর সময় মাটির গভীরে গভীর কাদার স্তর পাওয়া গেছে। ফলে ১৪টি পিলারের নকশা পাল্টাতে হচ্ছে।

‘সেতু ভবনে সাংবাদিক নিষিদ্ধ নয়’

সম্প্রতি সড়ক ভবনে ঢুকতে গিয়ে একজন সাংবাদিক হেনস্থার মুখে পড়েছিলেন। এরপর বেশ কিছু গণমাধ্যমে ‘সেতু ভবনে সাংবাদিক নিষিদ্ধ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সাংবাদিক নিষিদ্ধ করার কোনো কারণ নেই। সাংবাদিককে হয়রানির বিষয়টি নিয়ে সেতু সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘সচিবকে বলে দিয়েছি, সাংবাদিকদের সাথে  যেন যথাযথ আচরণ করা হয়।’ ‘আমি সব জানি, আমি অলরেডি নির্দেশ দিয়েছি তারা পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের সাথে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn