নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে ট্রান্সপেরেন্সি ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদন পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, ভোটের দিন গণমাধ্যম, নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাহী-বিচারিক হাকিম ও আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা কারও কাছ থেকে অনিয়মের কোনো তথ্য না পাওয়ায় টিআইবির প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করছি। বুধবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে (ইটিআই) এক অনুষ্ঠান শেষে সিইসি সাংবাদিকদের একথা বলেন। টিআইবির প্রতিবেদন বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘তাদের প্রতিবেদন পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করছি। কারণ তারা (টিআইবি) অনিয়মের অভিযোগ তুললেও সেদিন গণমাধ্যম ও নির্বাচনের মাঠে থাকা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কাছ থেকে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়েছে বলে তথ্য পাইনি আমরা। এজন্য টিআইবির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছি।’ ইসি ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত বলেও মন্তব্য করেছে টিআইবি। এ বিষয়ে টিআইবির বক্তব্যকে ‘অসৌজন্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেন সিইসি।তবে টিআইবির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়েও উদ্যোগী হবেন না বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, ‘এটা অসৌজন্যমূলক বক্তব্য, তাদের এভাবে কথাগুলো বলা ঠিক হয়নি। তবে আমরা এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেবো না।’

প্রসঙ্গত, ভোটের অনিয়ম নিয়ে মঙ্গলবার গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি ৫০টি আসনের মধ্যে অন্তত ৪১টি আসনে কোনো না কোনো অনিয়ম হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানায়। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে সংস্থাটি। এর আগে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, টিআইবি যে প্রতিবেদনটিকে গবেষণা বলে দাবি করছে, তা কোনো গবেষণা নয়। প্রতিবেদন মাত্র। কেননা, গবেষণা করতে যে সকল পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়, তা এখানে প্রয়োগ করা হয়নি। এটি সম্পূর্ণরূপে মনগড়া প্রতিবেদন। এ ছাড়া বলা হয়েছে-এটা তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন। তার অর্থই হচ্ছে এই প্রতিবেদন পূর্বনির্ধারিত প্রতিবেদন। তিনি বলেন, টিআইবি বলেছে গবেষণাটি গুণবাচক, মুখ্য তথ্যদাতার সাক্ষাৎকার ও পর্যবেক্ষণ, ক্ষেত্রবিশেষে সংখ্যাবাচক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তথ্য নেয়া হয়েছে পরোক্ষ উৎস থেকে। এভাবে কোনো গবেষণা হয়? তিনি বলেন, ভোটের কারচুপির তথ্য নিলে অবশ্যই সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে তথ্য নিতে হবে বা অথবা লিখিত কোনো ডকুমেন্ট থেকে তথ্য নিতে হবে, এসব করা হয়নি। কোনো সোর্স থেকে কী প্রক্রিয়ায় তথ্য নিয়ে তারা বলছে, ভোটের আগের রাতে সিল মারা হয়েছে- এসব কিছু উল্লেখ নেই। কাজেই এটা কোনো গবেষণা হয়নি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn