কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়দের প্রতিরোধ করতে ঘটনার সময় কয়েকটি বাড়িতেও গুলি চালানো হয় গত সোমবার বিকেলে ওই আক্রমণকালে সামনের রাস্তায় অস্ত্র হাতে সক্রিয় ছিল বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী। এ সময় সন্ত্রাসীরা কাউন্সিলরের পাথুরিয়াপাড়া থ্রি-স্টার এন্টারপ্রাইজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনের একটি রাস্তায় তাণ্ডব চালায়। প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫০ গজ পশ্চিমে কিলিং মিশনে জড়িত মুখোশপরা দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর গুলি করার একটি ভিডিও ফুটেজ এরই মধ্যে গণমাধ্যমের হাতে এসেছে।

২ মিনিট ৫১ সেকেণ্ডের ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দুই সন্ত্রাসী অস্ত্র উঁচিয়ে বাসাবাড়ি লক্ষ্য করে দৌড়ে দৌড়ে গুলি করছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও থেমে থেমে তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছেন। জনতাকে সংগঠিত হতে দেখে সন্ত্রাসীরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে একপর্যায়ে পালিয়ে যায়। তবে ওই সিসিটিভি ফুটেজে কাউন্সিলরের অফিসে ভেতরের হামলার দৃশ্য দেখা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কালো পোশাক ও মুখোশ পরা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ওই দিন কাউন্সিলরের অফিস, সামনের রাস্তা ও গলি পথে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেয়। প্রথমেই তারা কাউন্সিলরের অফিসে প্রবেশ করে গুলি চালায়। গুলির শব্দে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসতে চাইলে রাস্তায় মহড়া দেওয়া সন্ত্রাসীরা বাসাবাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, সন্ত্রাসীরা কাউন্সিলরের অফিস থেকে শুরু করে পশ্চিমে সিটি করপোরেশনের ডাস্টবিন ও একটি গ্যারেজ পর্যন্ত বাসাবাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। কাউন্সিলর সোহেল এলাকায় খুব জনপ্রিয় ছিলেন। তাকে তার কার্যালয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে- বিষয়টি তারা টের পেয়ে আমরা যে যা পেয়েছি তা-ই দিয়ে সন্ত্রাসীদের ঢিল মেরে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করেছি, তাই তারা (সন্ত্রাসীরা) গুলি চালায়। এসব দৃশ্য একটি ভবনের সিসিটিভির ক্যামেরায় ধরা পড়ে। রাতে র‌্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, ওই এলাকার সকল সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। আশা করি শিগগির জড়িতদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

গত সোমবার বিকেলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেলের পাথুরিয়াপাড়া থ্রি-স্টার এন্টারপ্রাইজের কার্যালয়ে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ ঘটনায় কাউন্সিলর সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত পাঁচজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনার পর নিহত কাউন্সিলর সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বুধবার দায়ের করা এ মামলার এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খবর: সমকালের।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn