বার্তা ডেক্সঃঃ তখন দুপুর সাড়ে ১২টা। উপজেলা পরিষদ এলাকার পূর্ব দিকের গেটের এক কোণে রবার দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল কুড়িয়ে পান মো. শাহেদ মিয়া (৬০)। কুড়িয়ে পাওয়া এই ৫০ হাজার টাকা তিনি ফিরিয়ে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর উপস্থিতিতে টাকা প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলায়। টাকা ফিরিয়ে দেওয়া শাহেদ মিয়া সদর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পল্লি জীবিকায়ন প্রকল্পের উপজেলা বিত্তহীন সমবায় সমিতি লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ধরমপাশা উপজেলা পরিষদের পূর্ব পাশের গেটের কোনায় সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি বান্ডিল কুড়িয়ে পান শাহেদ মিয়া। বান্ডিলটিতে ৫০০ টাকার মোট ১০০টি নোট ছিল। বান্ডিলটি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি মুঠোফোনে ধরমপাশার ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমানকে জানান। পরে ইউএনওর নির্দেশে উপজেলার সদর বাজারে কুড়িয়ে পাওয়া টাকার বিষয়ে মাইকিং করা হয়। পরে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে টাকার প্রকৃত মালিক নেহার মিয়ার কাছে এই টাকা হস্তান্তর করা হয়। তিনি ধান-চালের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

টাকা ফেরত পেয়ে নেহার মিয়া বলেন, ‘লুঙ্গির মধ্যে কোমরে পেঁচিয়ে টাকাগুলো রেখেছিলাম। টাকা হারানোর দশ মিনিট পর বুঝতে পারি, টাকাগুলো কোথাও পড়ে গেছে। পরে খবর পেয়ে ইউএনওর অফিসে গিয়ে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে টাকাগুলো নিয়ে আসি। স্বাধীন এই বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে এমন মানুষ জন্ম নিলে দেশটা অনেক আগেই উন্নত হয়ে যেত।’ সততার নিদর্শন রাখা শাহেদ মিয়া বলেন, ‘কোনো লোভী ব্যক্তির হাতে টাকা পড়লেই আর সেটির সন্ধান পাওয়া যেত না। লোভ মানুষের বড় শত্রু। কোটি টাকা পেলেও আমি ফেরত দিতাম। কারণ অন্যের সম্পদে আমার কোনো হক নেই।’ জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, কুড়িয়ে পাওয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে মো.শাহেদ মিয়া সমাজে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn