আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অনেক অভিযোগ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এমন কোনো অভিযোগ যেন আর না আসে, এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন। এ সময় সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ওবায়দুল কাদের। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে মঞ্চ থেকে নামার সময় ছাত্রলীগ নেতারা এগিয়ে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অনেক অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। এমন কোনো অভিযোগ যেন আর না শুনি।’ ছাত্রলীগ নেতাদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, অক্টোবরের যেকোনো সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো নিয়েই ছোট আকারে মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। এই মন্ত্রিসভায় অন্য কাউকে রাখার কোনো সুযোগ নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি এত দিন বলেছে, (কারাবন্দী) খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এখন এক কাঠি বাড়িয়ে বলছে, তারা নির্বাচন প্রতিহত করবে। এতে আমরা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র এবং নাশকতার আশঙ্কা করছি। তবে আমরা জনগণকে নিয়ে এটা প্রতিহত করব।’ তিনি আরও বলেন, কারও কোনো শর্ত মেনে আগামী নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। এ নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো সংলাপেরও প্রয়োজন নেই। দেশে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে সংলাপ করতে হবে।

গতকাল শনিবার বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ড. এমাজউদ্দীন আহমদ এক অনুষ্ঠানে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ চারটি শর্ত পূরণ হলে আগামী নির্বাচন হতে পারে। তাঁর এই বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বিএনপিকে কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করছে। ভবিষ্যতেও রাজনৈতিক দলগুলো সভা-সমাবেশ করবে। এ ব্যাপারে কেউ অনুমতি চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনের জন্য শর্ত দিয়েছে, কোনো শর্ত দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। সাংবিধানিকভাবে নিয়মকানুন মেনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনেও বিএনপি আসবে কি, আসবে না, সেটা দেখার বিষয় না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে বিএনপি আসবে। সেটা তো তাদেরই প্রয়োজনে আসতে হবে। নির্বাচন তো সরকারের অনুদান নয়। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বিএনপির অধিকার। বিএনপি নির্বাচনে না এলে কি গণতন্ত্র থেমে থাকবে? অবশ্যই না। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ইতিহাসে এই প্রথম এত বড় একটি অনুষ্ঠানে একজনই বক্তা ছিলেন, তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমি শুধু মানপত্রটা পাঠ করেছি। এই শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে আওয়ামী লীগ সংগঠিত, সুশৃঙ্খল, স্মার্ট এবং মডার্ন।’ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি শনিবারই করা হয়েছে। মিছিলের পাশে পরিবহন চলতে পারে কি না, সেদিকে নজর ছিল। তবে তারপরও দুই–একটি ঘটনা ঘটে থাকলে সে জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’-প্রথম আলো।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn