আগামী ৭ মে’র মধ্যে কোটা সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীঘের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সোমবার সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বৈঠকে এমন আশ্বাস দেন তিনি। তাঁর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ব্রিফিংয়ে জানান, ৭ মে’র মধ্যে কোটা সংস্কার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য আমাদের দুর্বলতা রয়েছে। তাদের কথা আমাদের প্রধানমন্ত্রী কখনো উপেক্ষা করেন না। তিনি আমাদের সে জন্য তাদের কাছে পাঠিয়েছেন। আমরা তাদের কথা শুনেছি। পাঁচ জন কথা বলেছেন। এখানে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এ ব্যাপারে একটা সমাধান বের করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার কোনও কঠোর অবস্থান নিয়ে নেই। তবে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়িতে যে তাণ্ডব চলেছে। সেখানে ভিডিও ফুটেজে এই তাণ্ডবের সাথে যারা জড়িত তাদের শাস্তি পেতেই হবে। কোটা সংস্কারের ভিসির কোনও সম্পর্ক নেই, সেখানে তিনি ও তার বাসভবন কোনও ভাবেই সম্পৃক্ত নয়। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, সেখানে হামলা তারা করেন নি, অনুপ্রবেশকারীরা করেছেন। আমিও বলেছি, ভিডিও ফুটেজে যাদের পাওয়া যাবে তাদেরই যেনো ধরা হয়, নিরীহ, নিরাপরাধ যেনো কেউ শাস্তি না পায়। শিক্ষার্থীরা কথা দিয়েছে তারা আন্দোলন তুলে নেবে। সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ব্যাপারে শিক্ষিত তরুণ ভাই ও বোনদের বলবো এক্ষেত্রে বিবেকের ভাষা যেনো ব্যবহার করবে। মহাসড়ক বন্ধ রাখলে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয় এটা মনে রাখতে হবে। ৭ মে পর্যন্ত সরকার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে। ওই পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে। ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সকল আটককৃতদের আজই মুক্তি দেয়া হবে। আন্দোলনের সময়ে আহত সকলের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার । আন্দোলনকারীদের প্রধানমন্ত্রীর উপরে আস্থা আছে আর কোটা সংস্কার নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নিজেই দিবেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা বিভিন্ন নাশকতা ঘটিয়েছে তাদের শাস্তির ব্যাপারে আন্দোলনকারীরা সরকারের সাথে একমত।
এই বৈঠকে কোটা সংস্কারের দাবিতে পাঁচ দফা দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। দাবিগুলো হলো—প্রথমত, কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসতে হবে। দ্বিতীয়ত,  কোটায় কোনও ধরনের বিশেষ নিয়োগ দেওয়া যাবে না। তৃতীয়ত,  চাকরি নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না। চতুর্থ, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাট-মার্কস ও বয়সসীমা নির্ধারণ করতে হবে এবং পঞ্চম দফা দাবি হলো, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধায় নিয়োগ দিতে হবে। বৈঠকে সরকার পক্ষে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাড়াও ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন। আন্দোলনকারী ছাত্রদের বিশ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn