জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৫ বছরের জেল হয়েছে। খালেদা পুত্র তারেক রহমানসহ বাকি ৫ আসামীর ১০ বছর করে সাজা হয়েছে। এই মামলার রায় ঘোষণার পূর্বে লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে হামলা চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে হামলায় মদতের অভিযোগে গ্রেফতার হতে পারেন খালেদার ছেলে তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার জেলে যাওয়ার আগে তাঁকে বিএনপি-র অস্থায়ী চেয়ারম্যান মনোনীত করে গিয়েছেন খালেদা জিয়া। নেত্রী জেলে যাওয়ার পরে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথম বিবৃতিটিও দিয়েছেন ইতিমধ্যেই অর্থ পাচারের অন্য একটি মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া তারেক। এ দিনের মামলাতেও তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালেদার রায়ের বিরুদ্ধে বুধবার এক দল বিক্ষোভকারী লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে হামলা চালান। কিছু আসবাবপত্র ভাঙার পাশাপাশি শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি দেওয়াল থেকে নামিয়ে মাটিতে ফেলে মাড়ায় বিক্ষোভকারীরা। মুজিবের ছবিতে জুতো মারা হয়। দীর্ঘক্ষণ এই অরাজকতা চলার পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভ ভেঙে দেয়। বিএনপি-র এক নেতা নাসির আহমেদ শাহিনকে গ্রেফতার করে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। তিনিই পুলিশকে জানান, তারেকের নির্দেশেই তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ঘটনার পরে বাংলাদেশ হাই কমিশন তারেক রহমানকে প্রধান আসামি করে ৫০ জনের বিরুদ্ধে লন্ডন পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, বিদেশি দূতাবাসে হামলার বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রধান আসামিকে গ্রেফতারের কথা পুলিশ বিবেচনা করছে।

বিএনপির একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানায়, বৃহস্পতিবার আদালতে যাওয়ার আগেও খালেদা প্রায় ৪৫ মিনিট কথা বলেন তারেকের সঙ্গে। দল চালানোর বিষয়ে ছেলেকে পরামর্শ দিয়ে যান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘‘দলকে ঐক্যবদ্ধ করে আগলে রেখো।’’ বিক্ষোভ আন্দোলন থেকে যাতে অশান্তি না-ছড়ায়, সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে যান অস্থায়ী চেয়ারম্যানকে। পূত্রবধু জেবায়দা ও ছোট্ট নাতনি জাইমার সঙ্গেও কথা বলেন খালেদা।

তবে এ রায়ের বিষয়ে সরকারের বক্তব্য উল্লেখ করে ওই গণমাধ্যমটি লেখেন, সরকার বার বার বলে এসেছে, এই মামলায় তাদের হাত নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই মামলা করার পরে তা খারিজের দাবি জানিয়ে খালেদা বেশ কয়েক বার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত তাঁকে নিরাশ করেছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন— ‘‘এই রায়ে প্রমাণ হয়েছে অন্যায়কারী যত শক্তিশালীই হোন, তাঁকে শাস্তি পেতে হবে।’’ তবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জেলে যাওয়া দেশের ভাবমূর্তির পক্ষে ভাল নয় বলেও তিনি মনে করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn