জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া::  তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি স্থানীয়দের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল। জনবলের অভাবে এখানকার চিকিৎসা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের মৌলিক অধিকার থেকে। জানা গেছে, একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা। এছাড়াও র্দীঘদিন থেকে ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদে কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ শূন্য থাকায় হাসপাতালটিতে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। এই সংকটের মধ্যেই হাসপাতালটির ৪জন ডাক্তারের মধ্যে ডা. তানভীর আনসারীকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ পাগলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে, ডা. মির্জা রিয়াদ হাসান ও ডা. মৃত্যুঞ্জয় রায়কে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং ডা. সাব্বির আহমেদকে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।এ ছাড়া ইউএইচএফপিও ডা. ইকবাল হোসেন দাপ্তরিক কাজে বিভিন্ন সময়ে জেলা-উপজেলায় সভা-সেমিনার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমানে হাসপাতালটিতে একজন চিকিৎসক ডা. সুমন বর্মন কয়েকজন সহকারীকে সাথে নিয়ে নামে মাত্র রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।  এবিষয়টি স্বীকার করে ইউএইচএফপিও ডা. ইকবাল হোসেন বলেন,ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে ৪জন চিকিৎসক অন্যত্র রয়েছেন। আমি অফিসিয়াল কাজে সভা সেমিনারে প্রায়ই ব্যস্ত থাকি।এদিকে উপজেলার প্রায় ৩লাখ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন একমাত্র চিকিৎসক সুমন বর্মন।

ডা. সুমন বর্মণ বলেন, প্রতিদিনেই রোগীদের ভিড় বাড়ছে। কিছুই করায় নেই। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের যতটুকু সম্ভব আমি একাই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা থেকে ১০কিলোমিটার দূর বাদাঘাট ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আলীনুর মিয়া জানান, হাসপাতালে ভাল কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নাই। মহিলাদের জন্য নাই গাইন ডাক্তার। এছাড়াও দাঁতের ডাক্তার, এক্সরে, ল্যাব টেকনেশিয়ানসহ বিভিন্ন পদ শূন্য থাকার কারনে উপজেলাবাসীকে জেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জেলা সদরের হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীদের চাপ। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জনসাধারনের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্থ করেন। উপজেলায় চিকিৎসাসেবাকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে ইতোমধ্যে সরকার এটিকে ৩০ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেছে। নতুন ভবনটি চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও সুনামগঞ্জ-১এর সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। ৩০ শয্যা বিশিষ্ট থাকাকালে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের পদ ছিল ৯টি। ৫০ শয্যায় উন্নীতকরনের পর নতুন লোকবল নিয়োগ হবে, নিশ্চিত হবে এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা এমনটাই আশা করেছিলেন এলাকাবাসী।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn