ছাতকে পৃথক ঘটনায় আওয়ামীলীগ সমর্থিত দু’ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি মামলার ঘটনায় আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আওয়ামীলীগের বিবদমান দু’গ্রুপের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। মামলার আসামী দু’চেয়ারম্যানের মধ্যে একজন আত্মগোপনে থাকলেও অপরজন প্রশাসনের সামনেই প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন। এ নিয়ে আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষ গ্রুপ ও সাধারন মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে তীব্র উত্তেজনা। যেকোন সময় এখানের আইন-শৃংখলা পরিসি’তির অবনত ঘটার আশংকা করছেন শরহবাসী।

১০ আগষ্ট উপজেলা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভা শেষে বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে আওয়ামীলীগের মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী সমর্থিত গ্রুপের ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ সাহেল ও এমপি মুহিবুর রহমান মানিক সমর্থিত গ্রুপের ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে মারা-মারির ঘটনা ঘটে। বিগত ইউপি নির্বাচনে উভয়ই নৌকার প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ বাদী হয়ে ১৫ আগষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ সাহেলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ২২ আগষ্ট কালীপুর পয়েন্টে মানববন্ধনে হামলা, গুলি বর্ষন ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে এনে সিংচাপইড় ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের হাজী আলকাছ আলীর পুত্র তাজিজুর রহমান বাদী হয়ে ২৫ আগষ্ট চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদকে প্রধান আসামী করে ৩৬জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি মামলা(নং-২৪) দয়ের করেন। উভয় চেয়ারম্যানরে উপর পৃথক ঘটনায় মামলা দায়ের পর থেকে সাহাব উদ্দিন সাহেল আত্মগোপনে থাকলেও দন্ডবিধি ৩২৬ ধারাসহ একাধিক ধারার দায়েরী মামলার প্রধান আসামী বিল্লাল আহমদ আহমদ চলাফেরা করছেন প্রকাশ্যে। প্রশাসনের লোকজনের সাথে উঠবস করে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন তিনি। পুলিশের চোখে বিল্লাল আহমদসহ আসামীরা পলাতক হলেও বাস্তবে তাজিুজর রহমানের দায়েরী মামলার আসামীরা দাপটের সাথেই পুলিশ প্রশাসনের সামনেই ঘুরাফেরা করছে। তার প্রভাব-প্রতিপত্তির কাছে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে প্রশাসনের লোকজন। চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদকে গ্রেফতার না করায় পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারন মানুষের ক্ষোভ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে সিংচাপইড় ইউনিয়নবারসীর মধ্যেও। পুলিশের বিমাতা সুলভ এমন আচরনে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছেন মামলার বাদী। এ ছাড়া গোবন্দগঞ্জে পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী সরকারী গাড়ী ভাংচুর করার ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা(নং-০৮/১৫)সহ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা(নং-৪৮৭/১৭), ছাতক জিআর ১৭১/১৬ ও জিআর ২৩২/১৬সহ একাধিক মামলা রয়েছে চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের বিরুদ্ধে। মামলার বাদী তাজিজুর রহমান জানান, এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের মদদে তার চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন সাহেলের উপর মিথ্যা মামলা দায়ের প্রতিবাদে ২২ আগষ্ট কালীপুর পয়েন্ট ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন চলাকালে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্ল্লাল আহমদ ও ইউপি সদস্য আজিুজর রহমান শান্ত র নেতৃত্বে ইউনিয়নবাসীর উপর সশস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষন করা হয়। মামলার প্রধান আসামী হওয়া সত্ত্বেও ক্ষমতা বলে বিল্লাল আহমদ প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। ৩০ আগষ্ট প্রশাসনের উপস্তিতিতে সে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভেজিএফ র চাল বিতরণ ও শহরে এসে পুলিশের সামনেই সে ঈদের কেনাকাটা করেছে। ঈদের আগের দিন ছাতকের হাইস্কুল মাঠে গরুর হাটে বিল্লাল আহমদকে আটকের জন্য জনতা প্রস্তুতি নিলে পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর হস্তক্ষেপে জনতার রোষানল থেকে সে রক্ষা পায়। তাৎক্ষনিকভাবে মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ছাতক থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করেন। বাদী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বিল্লাল আহমদকে দ্রুত গ্রেফতার না করা হলে জনতা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn