জগন্নাথপুরে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলায় এক যুবক জেল হাজতে রয়েছে। এ মামলার বিষয়ে বাদী ও ভিকটিম নিজেও জানেন না। কার স্বার্থে এ মামলা। এ নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। জানাগেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের খাগাউড়া গ্রামের মৃত মনাই উল্লাহ উরফে মনাই সাধুর ছেলে রুবেল মিয়া (৩০) ও একই ইউনিয়নের বাউধরণ গ্রামের মৃত দিলু মিয়ার ষোড়শি কন্যা স্কুলছাত্রীর (১৭) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের সুবাদে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। শারীরিক সম্পর্কের কিছু চিত্র মোবাইল ফোনে কৌশলে ভিডিও ধারণ করে রাখে চতুর প্রেমিক রুবেল মিয়া। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় শালিসি ব্যক্তিদের উদ্যোগে কেউ কারো সাথে কোন প্রকার সম্পর্ক রাখবে না মর্মে বিষয়টি আপোষে নিস্পত্তি হয়।
তবে হঠাৎ করে ঘটনার প্রায় দেড়মাস পরে গত ৭ জুলাই ভিকটিম স্কুলছাত্রীর চাচা সোহেল মিয়া বাদী হয়ে খাগাউড়া গ্রামের মৃত মনাই উল্লাহ উরফে মনাই সাধুর ছেলে রুবেল মিয়া ও একই গ্রামের মৃত আবদুল ওয়াহিদের ছেলে জনি মিয়াসহ ২ জনকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় ধর্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০৫ তারিখ ০৭/০৭/২০১৭ইং। মামলা দায়েরের পর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এসআই হাবিবুর রহমান মামলার আসামি রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করে সুনামগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ ছাপা হয়েছে।

এ ঘটনায় সরজমিনে মামলার বাদী সোহেল মিয়া বলেন, আমার নাম সোহেল আহমদ। এ মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমি কোন কাগজে দস্তগত করিনি। কেউ আমার নাম ব্যবহার করে এ মামলা দিয়েছে। ভিকটিম স্কুলছাত্রী বলেন, রুবেলের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল সত্যি। তবে জনি মিয়া জড়িত নয়। আমাদের এ বিষয়টি অনেক আগে নিস্পত্তি হয়ে গেছে। আমরা তো কারো কাছে বিচার প্রার্থী হয়নি বা মামলা করিনি। মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। স্থানীয় ইউপি সদস্য ঠাকুর মিয়া, সাবেক ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান প্রতাব, অন্য ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়াসহ স্থানীয় শালিসি ব্যক্তিরা জানান, এ ঘটনাটি আমরা অনেক আগেই নিস্পত্তি করে দিয়েছি। এখন আবার নতুন করে কে বা কারা মামলা দিয়ে অসহায় ভিকটিম পরিবারকে হয়রানী ও মানহানী করছে আমরা তা জানি না। এ ব্যাপারে ভিকটিম পরিবারের লোকজন আরো জানান, স্কুলছাত্রীর সৎ চাচা উক্ত মামলার ৪নং স্বাক্ষী ফারুক মিয়ার সাথে তাদের জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। বিরোধের প্রতিশোধ নিতে ফারুক মিয়া থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এ মামলা দায়ের করেছে। এছাড়া মামলার ২নং স্বাক্ষী পাবেল মিয়া জানান, এ মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এসআই হাবিবুর রহমান জানান, আমার জানামতে সোহেল মিয়া নিজে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছে। তবে তার নাম কেউ ব্যবহার করে থাকলে সে এসে আমাকে বলতে পারে। এ মামলার গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি রুবেল মিয়া সুনামগঞ্জ জেল হাজতে রয়েছে। আরেক আসামি জনি মিয়া পলাতক রয়েছে। তবে জনি মিয়া ঘটনার সাথে জড়িত কিনা তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। #

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn