ঢাকা: রাজধানীর পশ্চিম তেজকুনিপাড়ায় ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে একটি বাড়িতে র‌্যাবের অভিযানে ৩ জন ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছে। সেখান থেকে অবিস্ফোরিত গ্রেনেডসহ অাগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের কথা জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি। র‌্যাবের দাবি, নিহত ৩ জন জঙ্গি। তবে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর আগে সকাল সাতটার দিকে সেখানে র‌্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল (বোম ডিসপোজাল ইউনিট) গিয়ে কাজ শুরু করে। র‌্যাব সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের খুব সন্নিকটে জঙ্গিদের এ আস্তানাটি। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে ফেলা বাড়িটিতে রাত দুইটা থেকে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। ওই বাড়ি থেকে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়ে জঙ্গিরা। সেখানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই র‌্যাব সদস্য আহত হয়। নিহত হয় ঐ আস্তানার তিন ‘জঙ্গি’। র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, বিজয় সরণি থেকে মহাখালীর দিকে যাওয়ার পথে তেজকুনি পাড়ার একটি বাড়িতে জঙ্গিদের অবস্থান । পূর্ব তেজকুনি পাড়ার ছাপড়া মসজিদ এলাকার ছয় তলা ভবনটির পাঁচ তলায় ম্যাচবাসা ভাড়া নিয়ে ‘জঙ্গিদের’ আস্তানাটি গড়ে তোলা হয়। ভবনের ৬ষ্ঠ তলায়ও মেসবাসা ভাড়া নিয়ে ছাত্ররা থাকেন। অভিযানের সময় ৬ষ্ঠ তলায় ৭-৮ জন ছাত্র আটকা পড়েন বলে জানা গেছে। এদিকে ভবনটির মালিক সাব্বিরসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সন্দেহভাজন আস্তানায় আর কোন জীবিত ব্যক্তি নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘গোলাগুলি হয়েছে। এখানে ক্যাজুয়ালটি (মারা যাওয়ার ঘটনা) হয়েছে। ক্যাজুয়ালটি আছে ভেতরের দিকে। গ্রেনেড ছুড়েছে তাই সে ক্ষেত্রে ভেতরে ঢোকা নিরাপদ নয়। কিন্তু ভেতরে কয়েকজন ক্যাজুয়ালটি হয়েছে।’ ওই আস্তানায় বড় ধরনের কোনো জঙ্গি নেতা অবস্থান করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি হান্নান বলেন, ওই রকম তথ্য এখন আপাতত নেই।

‘গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ছিল’

কোথায় এবং কখন হামলার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা-এমন প্রশ্নে র‌্যাব কমান্ডার বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত কোনো তথ্যই পাইনি। আর যারা নিহত হয়েছেন তাদের নাম পরিচয় সম্পর্কেও তেমন কিছু জানতে পারিনি। তাদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাতে পারব।’ ‘যে তিন জন এখানে নিহত হয়েছে তাদের বিষয়ে যে তথ্য আমাদের কাছে ছিল তারা সবাই জেএমবির সদস্য। তাদের পরিকল্পনা ছিল… ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর নাশকতার পরিকল্পনা আছে। বিধ্বংসী কোনো একটি কার্যক্রমের জন্য তারা এখানে জড়ো হয়েছিল।’ এখানে যারা নিহত হয়েছে, তাদের নেতা তারা-এমন প্রশ্নে র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে বলা সম্ভবপর হচ্ছে না নেতা কারা। যে ডকুমেন্ট আছে, বাকিগুলো তদন্ত করেই বের হয়ে আসবে এর আগে যারা গ্রেপ্তার হয়েছিল অথবা নিহত হয়েছিল তাদের সঙ্গে কোনো কানেকশন আছে, অথবা এদের সাথে আর কারা কারা জড়িত আছে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn