ক্যারিয়ার জুড়ে বয়ে চলা চোটাঘাতের সঙ্গে সখ্যতাই প্রধান অন্তরায়। তবে আট বছর পেরিয়ে গেলেও মাশরাফি বিন মুর্তজার মন থেকে টেস্ট খেলার আশাটা ফুরিয়ে যায়নি। বরং প্রিয় ফরম্যাটে বল হাতে ছুটে চলার আগ্রহ দীপ্যমান তার চোখে-মুখে। আগের চেয়ে জমাট ফিটনেস তার আত্মবিশ্বাসের পালে হাওয়া যোগাচ্ছে। সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ না জানালেও গতকাল মাশরাফি বলেছেন, টেস্ট খেলার ইচ্ছাটা এখনো প্রবলভাবে আছে তার অন্তরে। সবকিছু ঠিক থাকলে অদূর ভবিষ্যতে আবার নড়াইল এক্সপ্রেসকে সাদা পোশাকে দেখা যেতে পারে। গত মার্চে টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানিয়েছেন। এখন খেলছেন শুধু ওয়ানডে। ২০০৯ সালের পর থেকে টেস্টের বাইরে। তারপরও এ ফরম্যাটে এখনো বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী (৭৮) মাশরাফি। টেস্টে ফেরার চিন্তা, পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে গতকাল তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই একজন খেলোয়াড়ের প্রবল ইচ্ছা থাকে যে সে টেস্ট ম্যাচ খেলুক। এটা আমারও, এখন বয়স ৩৪ হয়ে গেলেও ইচ্ছা অবশ্যই আছে। আসলে সবকিছু বিবেচনা করতে হবে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সুনির্দিষ্ট উত্তরটা আমি দিতে পারবো না। দেখা যাক, ফিটনেস আগের চেয়ে উন্নতি করেছি। এখন চাচ্ছি যে, যে ক’দিন খেলি আরও উন্নতি এবং এভাবে ধরে রাখতে। এর ভেতরে যদি অবস্থা এমন আসে, নিজের কাছে মনে হয়, প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার পর যদি উন্নতি করতে পারি যে, আমি সামর্থ্য রাখি খেলার। তারপর চিন্তা করা যাবে।’

সাদা পোশাকে ফেরার ক্ষেত্রে ফিটনেসই আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে মাশরাফিকে। তাই এখনই বলছেন না ফেরার কথা। আবার নাকচও করেননি। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট খেলার জন্য ফিটনেস যেটা বলেন, আমার সবমিলিয়ে ফিটনেস এখন আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে। হয়তোবা কিছু ম্যাচ খেলতে হবে। নিজেকে ওভাবে মানিয়ে নিতে হবে। মানসিকভাবে মানিয়ে নিতে হবে। তারপর হয়তো কাজটা করা যায়। কিন্তু এখনো যেহেতু আমি ওইভাবে কোনো চিন্তাই করিনি, যেখানে চিন্তা করিনি সেখানে উত্তর দেয়াও কঠিন। আর শুধু শুধু বলে দিলাম, ‘হ্যাঁ আমি খেলতে চাই এটাও ঠিক না।’ গত ৯ ডিসেম্বর হোটেল রেডিসন ব্লুতে মাশরাফি, সাকিব, মুশফিকদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়ে মিটিং করেছেন বিসিবির কর্তারা। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সেই মিটিংয়ে জোরালোভাবেই মাশরাফিকে টেস্টে ফেরার চিন্তা করতে বলা হয়েছে।

আইসিসির নতুন এফটিপিতে আগামী চার বছরে ৩৫টি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। মাশরাফির দৃষ্টিতে এটা দেশের ক্রিকেটের জন্য খুব ইতিবাচক দিক। তিনি বলেন, ‘এটা অনেক বেশি ইতিবাচক বিষয় আমাদের জন্য। আমাদের এখনকার খেলোয়াড়দের মাঝে শুধু বাংলাদেশ কেন আপনি সারাবিশ্বেই দেখেন আস্তে আস্তে টেস্ট খেলার প্যাশনটা কমছে। এটা আমাদের জন্য ভালো লক্ষণ। আমরা এখন ৩৫টা টেস্ট ম্যাচ পেয়েছি। তার মানে বছরে প্রায় ৭-৮টা করে টেস্ট ম্যাচ খেলা হবে। এখন টেস্ট যারা খেলে বা ভবিষ্যতে যারা খেলতে চায় তাদের জন্য অন্যরকম মোটিভেশন হিসেবে কাজ করবে এটা।’

দ্বিতীয় দফায় টেস্ট দলের অধিনায়ক হয়েছেন সাকিব আল হাসান। তার ডেপুটি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্টের নেতৃত্বের নতুন জুটির প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন মাশরাফি। তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই তাদের প্রতি অনেক অনেক বেশি শুভকামনা থাকবে। সাকিব অনেক আগেও এ কাজটা করেছে। এবং সফলভাবেই করেছে। আমার বিশ্বাস ওরা দু’জনই বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মুশফিকও অনেক ভালো ছিল। মুশফিকের রেকর্ডও অনেক সমৃদ্ধ। আশাকরি সাকিব এখন যেহেতু হয়েছে, সাকিব এটাকে আরও উপরে নিয়ে যাবে।’
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn