সুনামগঞ্জ  :: শাল্লা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান। একজন সরকারি কর্মকর্তাই নন, একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তাও বটে। ফলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ৮মাস ধরে কর্মস্থলে রয়েছেন অনুপস্থিত। তবে বেতন নিচ্ছেন ঠিকই। জানা গেছে, সর্বশেষ গত ১৭ মার্চ কর্মস্থলে ছিলেন শাল্লা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান। এরপর থেকেই উপজেলা থেকে উধাও তিনি। কথিত আছে, উনার রাজনৈতিক হাত লম্বা থাকায় কাউকে কোনো পরোয়া করেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একাধিকবার রেজুলেশনের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক বরাবরে সুপারিশ করেছেন। কিন্তু এর কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা এখনো দৃশ্যমান হয়নি। তাই ক্ষমতার দাপটে কর্মস্থলে না থেকেও ঢাকায় বসেই মাসের পর মাস বেতন নিচ্ছেন নিয়মিত।  এদিকে, শাল্লা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অনুপস্থিত থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজিজুর রহমান ২০১৮ সালের জুন মাসে যোগদান করার পরপরই মাসে ২/৪ দিন উপস্থিত থাকতেন। তবে গত ১৭ মার্চ থেকে ৮ মাস সময় ধরে কর্মস্থলে একেবারে অনুপস্থিত রয়েছেন। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার এই অনুপস্থির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীদের সরকারি অংশের বেতন-ভাতা প্রাপ্তির লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নথিপত্র পাঠানো, অনলাইন ক্লাস পর্যবেক্ষণ করা, শিক্ষাভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প তদারকি, উপবৃত্তি প্রদানসহ নানা কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে জানা যায়। সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তাঁর কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। অফিসের অন্যান্যরা উপস্থিত থাকলেও উনাকে দেখা যায়নি। একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি ঢাকায় রয়েছেন।

শনিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, আমি একটু বাহিরে আছি। দুয়েকদিন পর অফিস করব। অফিসে এসে আপনার সাথে বসে চা খাব। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আমি উপস্থিত থাকতে দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না। তিনি ৮ মাস ধরে কর্মস্থলেই নেই। তবে উনাকে একাধিকবার বলার পরও কর্মস্থলে উপস্থিত রাখা যাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল-মুক্তাদির হোসেন বলেন, ‘উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (আজিজুর রহমান) ৮মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তাঁকে একাধিকবার সতর্ক করেও কোনো কাজ হয়নি। গত নভেম্বর মাসে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আবারও চিটি দেয়া হবে।’ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) জসিম উদ্দিন জানান, শাল্লার ইউএনও এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন। বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn