তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবেই ব্রিটেনে বসবাস করছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী কায়সার কামাল।তিনি আরো বলেন, অভিবাসন আইনের মধ্যেই তারেক রহমান বৈধভাবে লন ্ডনে অবস্থান করছেন এবং বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করে তিনি অন্য কোন দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেননি।খবর বিবিসির। “তারেক রহমান বাংলাদেশের পাসপোর্ট হস্তান্তর করে তার নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন।” পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেবিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং তারেক রহমানের আইনজীবী কায়সার কামাল  পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক বলে আখ্যায়িত করেন। এজন্যে শাহরিয়ার আলমকে একটি আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। কায়সার কামাল জানান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এই বক্তব্য সম্পর্কে তার মক্কেল তারেক রহমান জানতে পেরেছেন এবং জানার পরেই তিনি তার আইনজীবীকে এই লিগাল নোটিশ পাঠাতে বলেছেন। তারেক রহমানের আইনজীবী বলেন, “এই লিগাল নোটিশে শাহরিয়ার আলম সাহেবকে আমরা বলেছি- আপনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা এবং বানোয়াট। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে শাহরিয়ার আলম সাহেবের এই বক্তব্যে বাংলাদেশে ও বিদেশে মি. তারেক রহমানের রাজনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা হানি হয়েছে।” “নোটিশ পাওয়ার দশ দিনের মধ্যে জনাব শাহরিয়ার আলমকে প্রমাণ করতে হবে যে তারেক রহমান পাসপোর্ট বর্জন করেছেন, অথবা তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। যদি কোনটাই না করেন তাহলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের করা হবে।” “লিগাল নোটিশের মাধ্যমে তিনি এটাই প্রমাণ করেছেন যে উনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেননি”- বলেন তারেক রহমানের আইনজীবী।

প্রায় ১০ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান কি বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের যৌথ নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমানের আইনজীবী জানান, “তিনি সবসময়ই বাংলাদেশের একজন নাগরিক ছিলেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।” “লন্ডন, আমেরিকার মত দেশে কেউ অবৈধভাবে বসবাস করতে পারে না। চিকিৎসার জন্যে তিনি বিগত ৯ বছর ধরে ব্রিটেনে আছেন এবং বৈধভাবেই তিনি তার পরিবার নিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়েই তিনি বৈধভাবে ব্রিটেনে বসবাস করছেন,” বলেন তিনি। তারেক রহমান ব্রিটেনের নাগরিকত্ব নিয়েছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তার আইনজীবী বলেন, “নাগরিকত্ব গ্রহণেরতো প্রশ্নই আসে না। তিনি বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ একটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। অতএব অন্য কোন দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের প্রশ্নই আসে না। তিনি ওই দেশের অভিবাসন আইন অনুযায়ী বৈধভাবে ওখানে আছেন। চিকিৎসা শেষ হলে তিনি আবার দেশে ফিরে আসবেন।” পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, “২০১২ সালে তারেক জিয়া তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দিয়ে তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব সারেন্ডার করেছে। সে কীভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়?”

তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে যখন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এরকম একটা বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে তখন তিনি নিজে কেন তার অবস্থান স্পষ্ট করছেন না- এই প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, “এখানে কোন অস্পষ্টতা বা বিভ্রান্তি নেই।” “কারণ তিনি চিকিৎসার জন্যে বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। যেহেতু আমাদের দলের চেয়ারপার্সন কারাগারে আছেন সেই হিসেবে দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে মি. রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন,” বলেন তিনি। তারেক রহমানের ‘নাগরিকত্ব বর্জন’ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য চ্যালেঞ্জ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি বাংলাদেশী পাসপোর্ট লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দিয়ে থাকেন তাহলে সেটি প্রদর্শন করুন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn