তাহিরপুর প্রতিনিধি : তাহিরপুরে পাউবোর ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি এবং নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তিত হাওরপারের কৃষক। যে-কোনো সময় পনিতে তলিয়ে যেতে পারে উপজেলার বৃহৎ বোর ফসলি হাওর শনি, মাটিয়ান ও মহা

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাহিরপুর উপজেলায় ছোট বড় ২৩টি বোরো ফসলি হাওর রয়েছে। এর মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন হাওরে ১৮ টি প্রকল্পে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সেই সাথে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফসলরক্ষা বাঁেধর কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ টি প্রকল্পের বিপরীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা বিল প্রদান করেছে।

২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ায় নির্দেশ থাকলেও সরজমিনে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সকল পিআইসিরা হাওর সংক্রান্ত সভায় এক সভায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে দাবি করলেও উক্ত ১৮ টি প্রকল্পের মধ্যে কোনোটিরই এখন পর্যন্ত ৩০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়নি। তাছাড়া মাটিয়ান হাওরে পাচনালিয়া, বড়দল নতুন হাটি স্কুলের বাঁধ, গুরমা এক্সটেনসন হাওরে মাহমুদপুর বাঁধ ও একই হাওরে বাঘমারা বাঁধে এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার মাটির কাজ শুরুই হয়নি।

অপরদিকে মাটিয়ান হাওর ধরুন্দ, সোহালা, আলমখালি, মেশিন বাড়ি, ঠাকাটুকিয়া, শয়তানখালি, বনুয়া, সিলানী তাহিরপুর, শনির হাওরে আহম্মখখালি, পুটিচোরা বারুঙ্কা, বীরনগর রাম জীবনপুর, লালুর গুয়ালা, মহালিয়া হাওরে তাপনা, মহালিয়া, মাহমুদপুর ফসল রক্ষা বাঁধের ৩০ ভাগ মাটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেই সাথে বাঁধে বাঁশ, বস্তা দিয়ে প্যালাসাইটিংয়ের কাজ ও সম্পন্ন হয়নি।

বাঁধের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় এবং নদীতে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাওর পারের কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। একাধিক কৃষক জানান, গত বছর শনির হাওরের লালুর গোয়ালা ও ঝালখালি নান্টুখালি দুটি বাঁধে সময় মত মাটির কাজ না করায় আকস্মিক নদীতে জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভেঙ্গে শনির হাওরের ১৬ হাজার হেক্টর বোর জমির ধান সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। শনির হাওর পারের ভাটি তাহিরপুর গ্রামের কৃষক সুনীল দাস জানান, গত বছর ফসল হানির কারণে চলতি বছর এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিনি জমি চাষাবাদ করেছেন। গত বছরের মতো এবছরও যদি বাঁধ ভেঙে হাওরে ফসল পানিতে তলিয়ে যায় তাহলে ঋণ পরিশোধ না করতে পেরে বাড়ি থেকেই পালাতে হবে, সেই সাথে পরিবার-পরিজনতো রয়েছেই।

বড়দল পাচনালিয়া ও স্কুলহাটি বাঁধের প্রকল্প চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিন বলেন, গত শুক্রবার তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারমান তাঁর কাজ উদ্বোধন করে গেছেন।

শনির হাওর ও মহালিয়া হাওর পারের দক্ষিন শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্বজিত সরকার বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, আমার ইউনিয়নে ফসল রক্ষা বাঁধের সকল পিআইসিদের তাগিদ দিয়েছি দ্রত কাজ সমাপ্ত করার জন্য।

দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও জামলাবাজ মেশিনবাড়ি প্রকল্প পি আইসি আজাহার আলী বলেন, বাঁধের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি আগামী সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আশা করছি সম্পন্ন হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, নিয়ম অনুয়ায়ী ২৮ মার্চের মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ সমাপ্ত করার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে ।
তাহিরপুর উপজেল পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, উপজেলার ১৮ টি প্রকল্পের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শন করেছি বাকিগুলো দু একদিনের মধ্যে পরিদর্শন করব। তবে বাঁধের কাজ এখনো শতভাগ সম্পন্ন হয়নি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn