এমএ রাজ্জাক :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হাওলি জমিদার বাড়ি সংরক্ষণ ও খননের লক্ষ্যে প্রাথমিক মাঠ জরিপ চালিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্নত্বত্ত্ব বিভাগ। তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামে ২০ ও ২১ নভেম্বর সরেজমিন জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নত্বত্ত্ব বিভাগের দুই শিক্ষক ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ৬০ শিক্ষার্থী। জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করেন অধ্যাপক ড. অসিত বরণ পাল। সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হলহলিয়া গ্রামে এককালে প্রাচীন লাউড় রাজ্যের রাজধানী ছিল। বিলুপ্তপ্রায় লাউড় রাজ্যের প্রাচীন নিদর্শন হাওলি জমিদার বাড়ি। সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় রাজা বিজয় সিংহের স্থাপত্যের শেষ নিদর্শনটুকুও হারিয়ে যাচ্ছে লাউড় রাজধানীর খ্যাত নাম থেকে। প্রায় ১২শ’ বছর আগে রাজা বিজয় সিংহ বাড়িটি তৈরি করেন, যা আজও হাওলি জমিদার বাড়ি নামে এলাকায় সমাদৃত। ৩০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়িটিতে ছিল বন্দীশালা, সিংহদ্বার, নাচঘর, দরবার হল, পুকুর ও সীমানা প্রাচীর। ১২শ’ বছর পরেও এর কিছু স্থাপনা এখনও দৃশ্যমান রয়েছে।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে লাউড় রাজ্যের শেষ নিদর্শনটুক সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হলে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. সাদিক রাজবাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে একাধিকবার হাওলি রাজবাড়ি সরেজমিন পরিদর্শন করেন। সেই সাথে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্নত্বত্ত্ব বিভাগকে অনুরোধ করেন সরেজমিন জরিপ করে বিলুপ্তপ্রায় লাউড় রাজ্যের শেষ নিদর্শনটুকু সংরক্ষণ করা যায় কি-না। এরই ধারাবাহিকতায় প্রত্নত্বত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সরেজমিন এসে মাঠ জরিপ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নত্বত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপাক ড. অসিত বরণ পাল বলেন, আমরা দু-দিন বাড়িটিতে প্রাথমিক জরিপ করেছি, রাজবাড়িটির অধিকাংশ স্থাপনা এখন আর দৃশ্যমান নেই, সামান্য কিছু স্থাপনা দৃশ্যমান রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলে সামনের দিকে অগ্রসর হবো। এটি সংরক্ষণ করা হলে কালের সাক্ষী প্রাচীন নিদর্শনটুকু রক্ষা হবে। সেই সাথে নতুন প্রজন্ম লাউড় রাজ্যের আরও ইতিহাস জানতে পারবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn