এম এ রাজ্জাক, তাহিরপুর :: সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার পরও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হাত বাড়ালেই মিলছে সর্বনাশা ইয়াবা। মেথঅ্যাম্ফিটামিন ও ক্যাফেইন-এর মিশ্রণে তৈরি নেশাজাতীয় জীবন ধ্বংসকারী এ ইয়াবা ট্যাবলেটের তাহিরপুর সীমান্ত পর্যটন এলাকায় এখন অহরহ মিলছে। এখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ডালে ডালে চললেও মাদক ব্যবসায়ীরা চলছে পাতায় পাতায়। তারা নিত্য নতুন ও অভিনব কৌশল অবলম্বন করছে।  ফলে, সীমান্ত এলাকায় মাদক রোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি নামমাত্র ইয়াবা সহ মাদক আটক করলেও এর সঙ্গে জড়িতরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। চলতি মাসের ৬ মে বাদাঘাট পুলিশ ফাড়ির একটি টিম ৮০০পিস ইয়াবা সীমান্তবর্তী শিমুলতলা গ্রাম থেকে উদ্ধার করে। তবে, এর সঙ্গে জড়িত কোন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এলাকায় হঠাৎ এতো মাদক উদ্ধার হওয়ায় এখানকার সচেতন মানুষ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তাহিরপুর সীমান্তের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে জানান, তাহিরপুর সীমান্তের ওপার থেকে ঈদকে সামনে রেখে এখন বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে ওপার থেকে মদ, গাজাঁ, হেরোইন মরননেশা ইয়াবা মাদকব্যবসায়ীরা নিয়ে আসছে এপারে। সীমান্ত এলাকা সহ উপজেলা জুড়েই মাদকে এখন সয়লাব হয়ে গেছে। সীমান্তের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, দুর্দান্ত প্রতাপের সঙ্গে চালিয়ে যাওয়া এই মাদক সিন্ডিকেটকে নানাভাবে ব্যাকআপ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের দুধের আউটা গ্রামের মাদক স¤্রাট নূর জামালের ছেলে বালিয়াঘাট বিজিবির কতিথ সোর্স পরিচয়দানকারী জিয়াউর রহমান জিয়া। মাদক স¤্রাট জিয়া আড়াল থেকে মাদক মামলার জেল ফেরত আসামীদের দিয়ে সে অবাধে এলাকায় ইয়াবা ও মাদক বিক্রি করাচ্ছে। মাদক স¤্রাট জিয়া বালিয়াঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে অন্তত ২০ থেকে ৩০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী দিয়ে খুচরা পর্যায়ে ইয়াবা বিক্রি করছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- ইয়াবা বিক্রির অন্যতম স্থান হচ্ছে, তাহিরপুর সীমান্তের লাউড়েরঘর, বারেকটিলা, বড়ছড়া, চানপুর, ট্যাকেরঘাট, বালিয়াঘাট, লাকমা, লালঘাট, চারাগাও, কলাগাও, জঙ্গলবাড়ী, বাগলী, লামাকাটা , শ্রীপুর বাজার, তরং মাজার প্রাঙ্গণ, বাদাঘাট বাজার, তাহিরপুর সদর, আনোয়ারপুর সহ বেশ কয়েকটি স্থানে। তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম বলেন, তাহিরপুর থানায় তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ উপজেলা থেকে মাদক নির্মূল করতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, মাদকের সঙ্গে পুলিশের কোন আপোষ নেই।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মাকসুদুল আলম বলেছেন, সুনামগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় মাদক প্রতিরোধে বিজিবি জিরোটলারেন্স। ঈদকে সামনে রেখে যাতে মাদক ব্যবসায়ীরা ওপার থেকে যাতে এপারে মাদকদ্রব্য না আনতে পারে সে জন্য সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহলের পাশাপাশি বিজিবির বিশেষ টিম মোতায়েন রয়েছে। তিনি বলেন, মাদকের সঙ্গে বিজিবির কোন সদস্য জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn