সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন হাওরে নিষিদ্ধ কোনা জাল দিয়ে জেলেরা অবাধে দেশীয় প্রজাতীর পোনা ও ডিমওয়ালা মা মাছ শিকার করলেও উপজেলা মৎস্য দপ্তর কর্মকর্তা রহস্য জনক কারনে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। এতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস হয়ে স্থানীয় বাজারগুলোতে দেশীয় মাছের আকাল দেখা দিচ্ছে। উপজেলা মৎস্য দপ্তর কার্যালয়ে ঘটা করে মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করলেও বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে পোনা এবং ডিমওয়ালা মা মাছ বিক্রি হলেও মৎস্য কর্মকর্তা এসব বন্ধে কোনো কার্যকরী প্রদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছেনা।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পর্যাপ্ত পরিমান অর্থ বরাদ্দ না থাকায় পোনা ও ডিমওয়ালা মা মাছ নিধন বন্ধে নিয়মিত অভিযান চালাতে পারছেন না তারা। মশারি ও কোনা জাল দিয়ে মাছ শিকার করায় মাছের উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এ উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৭ হাজার ৯শ ৬৯ জন। এ ছাড়াও প্রায় ১০ হাজার ১শ জন মৌসুমি জেলে রয়েছে।

সোমবার কয়েকটি হাওর ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, মশারী জাল, বেড় জাল, কোনা জাল ও প্লাষ্টিকের খাঁচা সহ নানা উপকরণ দিয়ে ডিমওয়ালা মা মাছ ও পোন শিকার করছে এক শ্রেনীর জেলেরা। শৈল, টাকি, টেংরা, বাইম, বোয়াল, রই, কার্গো, কাতলা, গজার, পুঁটি এমন কি মৎস্য দপ্তর থেকে উন্মুক্ত জলাশয়ে অবমুক্ত করা বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছের পোনা নিধন করতেও দ্বিধাবোধ করছেনা মৎস্য শিকারীরা।মাটিয়ান হাওর পাড়ের সুজন নামে একজন জানান, সম্প্রতি মাটিয়ান, শনি ও টাঙ্গুয়া হাওর সহ কয়েকটি হাওরে মশারি ও কোণা জাল দিয়ে জেলেরা পোনা ও ডিমওয়ালা মা মাছ ধরছে। তাঁদের জালে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছের পোনা ধরা পড়ছে। ফলে স্থানীয় বাজারগুলোতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর দেশীয় মাছের আকাল পড়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্দু চৌধুরী বাবুল বলেন, হাওরে শুধু অভিযান চালিয়ে এ জালের ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। সরকারিভাবে তাদের জন্য এ মৌসুমে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ আর্থিক সহায়তার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।উপজেলা মৎস্য দপ্তর কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন বলেন, হাওরগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এতো বড় বিশাল হাওরে স্বল্প পরিসর লোকবল নিয়ে কোনা জাল দিয়ে পোনা ও ডিমওয়ালা মা মাছ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, মশারি বা কোনা জাল দিয়ে পোনা মাছ শিকার করা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। হাওরে পোনা মাছ নিধন বন্ধে মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে হাওরে অভিযবন চালিয়ে ৪ হাজার টাকা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমা করা হয়েছে। হাওরগুলোতে পোনা মাছ নিধন বন্ধে ভ্রাম্যমান অভিযান সব সময় অব্যাহত থাকবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn