‘তিন তালাক’ বলে বা লিখে তাৎক্ষণিক বিবাহবিচ্ছেদের বিরুদ্ধে আইন করতে চলেছে ভারত। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, তিন তালাক বলে বিয়ে ভেঙে দিলে তা বৈধ হবে না এবং এ কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। প্রস্তাবিত এই আইনের খসড়া এখন রাজ্য সরকারগুলোর কাছে পরামর্শের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত এই আইনটির নাম মুসলিম উইমেন প্রোটেকশন অব রাইটস অন ম্যারেজ বিল। গত আগস্ট মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাকের বিধানকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দেওয়ার পর এ আইনপ্রণয়নের কাজ শুরু হয়। কারাদণ্ডের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের প্রাপ্য জরিমানা ও সমর্থন দেওয়ার কাজও করবে এই আইন। ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে তিন তালাকের বিধান চালু আছে। ঐতিহ্যগতভাবে একজন মুসলিম পুরুষ মৌখিকভাবে ‘তিন তালাক’ দিয়ে একতরফা বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারেন। শুধু মৌখিক নয়, ই-মেইল বা খুদে বার্তার মাধ্যমেও তিন তালাক দেওয়ার নিয়ম প্রচলিত আছে।

পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাকের নিয়মকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে রায় দিলেও এখনো ভারতে তিন তালাকের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে। প্রস্তাবিত নতুন আইনের খসড়ায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে বিচার চলাকালে জামিন না দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে মৌখিক বা লিখিত—যেকোনো উপায়ে তিন তালাক দেওয়ার প্রচলিত ব্যবস্থাকে বেআইনি আখ্যা দেওয়া হয়েছে। একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তিন তালাক দেওয়ার পর যদি কোনো স্বামী তাঁর স্ত্রীকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন, তবে ওই নারীকে সব ধরনের আইনি সুবিধা দেওয়ার নির্দেশনা আছে নতুন আইনের খসড়ায়। ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এই খসড়া পার্লামেন্টের আগামী শীতকালীন সভায় পাস হওয়ার সম্ভাবনা আছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি এ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মুসলিমরা ভারতের সর্ববৃহৎ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। যে কটি দেশে এখনো তিন তালাক প্রচলিত আছে, সেগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম। পাঁচ নারী দায়ের করা পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাককে অবৈধ ঘোষণা করেন। তিন তালাক ব্যবস্থার কারণে নিজেদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে—এই মর্মে ওই পাঁচজন নারী আদালতে আরজি জানিয়েছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn