বার্তা ডেক্সঃঃসুনামগঞ্জের হাওরে ২০১৭ সালে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় তিন বছর পর গতকাল বুধবার দুপুরে এ মামলার বাদী ও কয়েকজন সাক্ষীর বক্তব্য নিয়েছেন দুদকের সিলেট কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। অন্য মামলাটি জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে দায়ের করেছিলেন সমিতির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল হক।দুদকের সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন আইনজীবী সমিতির দায়ের করা মামলার তদন্তের প্রয়োজনে মামলার বাদী ও তিনজন সাক্ষীর বক্তব্য গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি এর বেশি কিছু বলতে চাননি।

জানা যায়, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ফসলহানি ঘটে। হাওর বিপর্যয়ের এ ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত হয়। এর পর হাওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে দুটি মামলা হয়। একটি মামলা করে দুদক ও অন্যটি সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আহমদ ওই (২০১৭) বছরের ২ জুলাই বাদী হয়ে ৬১ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামির তালিকায় পানি উন্নয়ন বোডের্র ১৫ প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা এবং ৪১ জন ঠিকাদার ছিলেন। ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ৩৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে মামলার এজাহারে থাকা ৩৪ জনকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। নতুন করে যুক্ত করা হয় ছয়জনকে। এর পর অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করা হয়। তবে আদালত এখনো দুদকের অভিযোগপত্র গ্রহণ করেনি। এদিকে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট একই অভিযোগে সুনামগঞ্জের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পৃথক মামলা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয় ১৩৯ জনকে। এর মধ্যে দুদকের মামলার ৬১ জন আসামিও আছেন। এর বাইরে ৭৮ জন হলেন ৩৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদকে পাঠানোর আদেশ দেন। এ মামলায় গতকাল বুধবার প্রথম বাদী ও তিন সাক্ষীর বক্তব্য নেওয়া হয়।

দুদকের কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য দেন- মামলার সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা মালেক হোসেন পীর, জেলা সিপিবির সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার ও ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান। সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির মামলার বাদী আবদুল হক বলেন, ‘দুদকের মামলার অভিযোপত্রে অনেক আসামির নাম আসেনি। আবার আমাদের মামলায় পিআইসির লোকজনও আসামি আছেন। আমাদের আবেদন হচ্ছে দুদকের মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে দুটি মামলা একীভূত করে পুনরায় তদন্ত করা। আমরা চাই প্রকৃত দোষীরা যেন ছাড় না পায়।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn