ওমর ফারুক নাঈম :: মৌলভীবাজারের ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী শাবাব ও ছাত্রলীগ কর্মী নাহিদ আহমদ মাহী খুনের ঘটনায় মামলার এজাহারে শাবাবের সাথে তুষার গ্রুপের বিরোধের জেরেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর রবিবার নিহত শাবাবের মা সেলিনা রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় তুষার গ্রুপের প্রধান আনিসুল ইসলাম তুষারসহ ১২ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহত মোহাম্মদ আলী শাহবাবের সাথে তুষার গ্রুপের বিরোধের কারণেই দীর্ঘদিন যাবৎ তুষার শাহবাবকে হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ১০/১২ দিন পূর্বে নিহত মাহি সাথে তুষার গ্রুপের কর্মী ফাহিমের ঝগড়া হয়। এই বিষয়টি মিমাংসা করার জন্যই ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার ৭ ডিসেম্বর সন্ধায় নিহত মোহাম্মদ আলী শাবাব, নিহত নাহিদ আহমদ মাহিসহ অর্ক, বিপ্লব, পল্লব ও সোহানকে প্রধান আসামী আনিসুল ইসলাম তুষার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রাবাস এলাকায় ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে পৌঁছার পর তুষার গ্রুপের সাথে শাবাবের কথাকাটাটি হয়। এক পর্যায়ে তুষার গ্রুপের কর্মীরা শাবাব ও মাহিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এসময় ঘটনাস্থলে থাকা অর্ক, বিপ্লব, পল্লব ও সোহান ভয় পেয়ে সাইফুর রহমান রোডে সাউথইষ্ট ব্যাংকের বিপরিতে ব্যাডমিন্টন মাঠে শাবাব ও মাহির বন্ধুদের অবগত করে। জুনেদ নামের এক পথচারি ও শাবাব-মাহির বন্ধুরা গুরুত্বর আহত শাবাব ও মাহিকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।

পরে শাহবাবের মা প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পারেন উলয়াইল এলাকার মৃত আকিকুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে আনিসুল ইসলাম তুষার (২৭), শমসের নগর রোডের বাদশা মিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান (২০), পশ্চিম ধরকাপন এলাকার সৈয়দ বুলু মিয়ার ছেলে সৈয়দ সৌমিক (২২), রাজনগর উপজেলার চকিরাই গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মুক্তির ছেলে আশফাকুল ইসলাম মাহদী (২০), মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রবাসের শিক্ষার্থী জামিল (১৮), সদর উপজেলার পাগুলিয়া এলাকার আব্দুল মুকিতের ছেলে সনি হায়দার (২০), বেরিচর পশ্চিম বাজার এলাকার ফখরুল ইসলামের ছেলে রুবেল মিয়া (২৮), সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী কনক মিয়া (১৮), শহরের মাতার কাপন এলাকার সৈয়দ আবু জাফরের ছেলে প্রতীক হাসান (২০), সদর উপজেলার মোকাম বাজার এলাকার হৃদয় আহমদ (২১), রাজনগরের মহলাল এলাকার আয়ুব হাসানের ছেলে তামিম হাসান (২০), শহরের কোর্ট এলাকার ফাহিম মুনতাসির (২০) সহ আরো ৬-৭ জনকে অজ্ঞাতরা মোহাম্মদ আলী শাবাব ও নাহিদ আহমদ মাহিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। এ বিষয়ে নিহত শাহবাবের মা সেলিনা রাহমান চৌধুরী বলেন, পরিকল্পনা করেই তুষার গ্রুপ আমার ছেলে শাবাবকে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের শাস্তি চাই। আমরা ছেলের দেশের নোংরা ও প্রতিহিংসা রাজনীতির কাছে বলি হয়েছে। মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহাম্মদ জানান, নিহত শাহাবাবের মা সেলিনা রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে ১২ জন ও আরো অজ্ঞাত ৬-৭জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারকৃত রুবেল, কনক ও জামিল এজহার ভূক্ত আসামী। আদালত এদের ২ দিনের রিমান্ড দিয়েছে। রিমান্ডে এরা ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল তবে হত্যার সাথে সম্পৃক্ত নয় বলে দাবি করছে। বাকি আসামীদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn