ছুটিতে এসে আটকে পড়া ইতালি প্রবাসীরা কাজে ফেরার দাবিতে ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের সামনে মানববন্ধন করেছেন।  রোববার সকালে তারা গুলশানে দূতাবাসের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় মানববন্ধন থেকে তারা ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি এবং ফ্লাইট চালুর দাবি জানান। প্রবাসীরা জানান, ৮ থেকে ১০ মাস ধরে আটকে পড়ায় অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। আয়হীন সময় কাটিয়ে অনেকেই ঋণগ্রস্ত। ভিসার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে এখনও কোনও ঘোষণা নেই ইতালির। এদিকে দুপুর ১২টার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে আরেকটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধন থেকে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করা হয় বাংলাদেশ ও ইতালি সরকারের কাছে। দাবিগুলো হচ্ছে- যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে; তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেয়াদ বৃদ্ধি করা, বাংলাদেশ থেকে ইতালির ফ্লাইট চালু করা, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতালি প্রবাসীদের সহায়তা করা।

আটকে পড়া ইতালি প্রবাসী হৃদয় আহমেদ বলেন, অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছি, কিন্তু কারও কাছ থেকে কোনও তথ্য পাইনি, কোনও সহায়তা পাইনি। দীর্ঘ সময় ধরে বেকার বসে আছি। যদি দ্রুত ফিরে না যেতে পারি তাহলে চাকরি চলে যাবে। অনেকের ফ্যামিলি ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। মেয়াদ না বাড়লে তাদের ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। অথচ সেখানে (ইতালিতে) পরিবার রয়েছে, সবকিছু পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে মার্চে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ রাখে। তবে সে সময়ে ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় বেশকিছু চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফেরেন ইতালি প্রবাসীরা। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকেও চার্টার্ড ফ্লাইটে ইতালিতে ফেরেন অনেকেই। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যবিধি ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নীতিমালা অনুসরণ করে ১৬ জুন থেকে সীমিত পরিসরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হয়। এরপর কয়েক’শ প্রবাসী বিভিন্ন ফ্লাইট ধরে রোম ও মিলানে পৌঁছান। গত ৬ জুলাই বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া একটি ফ্লাইটের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেয় ইতালি। ওই ঘোষণার পরও ৮ জুন বাংলাদেশ থেকে কাতার হয়ে ইতালিতে যাওয়া দুটি ফ্লাইটের ১৬৮ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। স্মরণ করা যায় ইতালী প্রবেশে বাংলাদেশিসহ ১৬টি দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। সর্বশেষ নোটিশে ওই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত করোনা নিয়ন্ত্রণে ইতালিজুড়ে বাড়তি সতর্কতা জারি রয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn