দোয়ারাবাজারে লাঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান

ডা. সিফাত আরা সামরিন 

দোয়ারাবাজারে চিকিৎসা সেবা চাওয়ায় রোগীর এক স্বজনকে লাঞ্চিতের অভিযোগ ওঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. সিফাত আরা সামরিনের বিরুদ্ধে। ঘটনা সুত্রে জানা যায়, আজ (২ অক্টোবর) শনিবার ভোর ৫টায় উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরাটিলা (আজবপুর) গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ বীরপ্রতীক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে জ্ঞান হারান তাঁর বড় ছেলে মেজবাউল গণি সুমন। এ অবস্থায় তাকে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নিয়ে যাওয়া হয় দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এসময় জরুরি বিভাগে কোনো ডাক্তার না পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সিফাত আরা সামরিনের কোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়া হয় রোগীকে। এসময় সেবার বদলে উল্টো রোগী ও রোগীর স্বজনদের তিরস্কার করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পরে জরুরি বিভাগের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ডা. হাসান মাহমুদের কাছে সেবা নেন তাঁরা।

রোগীর স্বজন সদ্য প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ বীর প্রতীকের ভাগ্নি শাহানা আক্তার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, “সামরিন মেডামের বাসায় গিয়ে বললাম হাসপাতালে কোনো ডাক্তার নাই, আমি বীরপ্রতীক আব্দুল মজিদের বড় ছেলেকে নিয়ে এসেছি, উনার অবস্থা খুব খারাপ, এই মুহুর্তে একটু ট্রিটমেন্টের দরকার। কথা শোনে ডাক্তার সিফাত আরা সামরিন আমাকে বলেন, বেরিয়ে যা, বেরিয়ে যা, এখানে কেন আসছিস? আমি বীরপ্রতীককে চিনি না’। এসময় রুমে থাকা এক মহিলাকে বলছেন, ‘ওরে ঘাড় ধইরা বের কইরা দরজা দিয়ে দে, অফিস টাইম এখন না, বেরিয়ে যা, বেরিয়ে যা।”

শাহানা আক্তার বলেন, ‘এই ডাক্তারের খারাপ আচরণের সুষ্ঠু বিচার চাই আমি। এখানে ডাক্তাররা যেভাবে অবহেলা করে তা বলার মতো না।’রোগী মেজবাউল গণি বলেন, “আমার আব্বা মারা যাওয়ার খবর শোনে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের সরণাপন্ন হই। ডাক্তার আমার ফুফাতো বোনের সাথে খারাপ আচরণ করে তাকে ঘর থেকে বের করে দিতে আয়াকে নির্দেশ দেয়। তাই উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি আমার অনুরোধ, রোগীরা যাতে কোনো ডাক্তারের কাছ থেকে যেনো এসরকম কোনো ব্যবহার না পায়।”

এবিষয়ে জানতে চাইলে আরএমও ডা. সিফাত আরা সামরিন প্রতিবেদককে বলেন, “আমি ৭ দিনের ছুটিতে আছি। আমার বাসার হাউজ কিপারকে নির্দেশ দেওয়া আছে বাসায় যাতে কাউকে ঢুকতে না দেওয়া হয়। সকালে আমার বেডরুমে একজন ডুকে পরলে আমি আমার হাউজ কিপারকে একটু বকাঝকা করেছি। রোগীর সাথে খারাপ ব্যবহার করিনি।” উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সফর আলী বলেন, “চিকিৎসা সেবা চাইতে গিয়ে ডাক্তার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা সন্তান লাঞ্চিত হবার খবর শুনে মর্মাহত হয়েছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। এই দেশে আমাদের সন্তানরা অযথা লাঞ্চিত হবে তা হতে দেবো না। প্রয়োজনে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আবার মাঠে নামবো।” যোগাযোগ করা হলে সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

-২

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn

এ বিভাগের আরো খবর

দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে দেব না : প্রধানমন্ত্রী   

দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে দেব না : প্রধানমন্ত্রী   

ড. ইউনূসের সাজার রায় স্থগিতের আদেশ হাইকোর্টে বাতিল  

ড. ইউনূসের সাজার রায় স্থগিতের আদেশ হাইকোর্টে বাতিল  

বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে সড়কে প্রাণ গেল ৪ জনের 

বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে সড়কে প্রাণ গেল ৪ জনের