ধর্মপাশা উপজেলার গলহা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রী (১৪) ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের তৎপরতায় বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে। গত রোববার বিকেলে ওই বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক ওইদিন দুপুরে ওই ছাত্রীটির বাড়িতে বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক ও একজন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যকে পাঠিয়ে এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করার যথাযথ ব্যবস্থা নেন।এলাকাবাসী, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের গলহা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীর (১৪) সঙ্গে একই এলাকার এক যুবকের (২৫) বিয়ের অনুষ্ঠান গত রোববার বিকেল তিনটায় সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র তালুকদারের অনুরোধে তিনজন শিক্ষক ও একজন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে ওইদিন দুপুরে ছাত্রীটির বাড়িতে যান। গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা ওই বাড়িতে যান এবং বাল্যবিয়ের আনুষ্ঠানিকতার সত্যতা পান। পরে মেয়েটির বাবা ও মাকে ডেকে এনে বাল্যবিয়ের কুফল তুলে ধরাসহ রাষ্ট্রীয় আইনে এই বিয়ের স্বীকৃতি না থাকার বিষয়টিও বুঝিয়ে বলা হয়। এ কথা শুনার পর তারা এই বিয়ে বন্ধ করতে সম্মত হন। গলহা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য নবাব আলী বলেন, প্রধান শিক্ষক এই বাল্যবিয়ের খবরটি আমাকে জানিয়েছেন। পরে ওই বিদ্যালয়ের তিনজন সহকারী শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে ওই ছাত্রীটির বাড়িতে গিয়ে তার বাবা মাকে বুঝিয়ে বলার পর এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। গলহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র তালুকদার বলেন, রোববার আমি দাপ্তরিক কাজে উপজেলা সদরে চলে এসেছিলাম। যে ছাত্রীটির বাল্যবিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল সে আমাদের বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। মেয়েটির জীবন যাতে অকালে ঝরে না যায় সে জন্য নিজের সন্তানের মতো মনে করে এই বাল্যবিয়ে বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন খন্দকার বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের এই উদ্যোগটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। যার যার নিজস্ব অবস্থান থেকে বাল্যবিয়ে বন্ধে এগিয়ে এলে এই দেশটি বাল্যবিয়ে মুক্ত দেশ হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn