ফাইল ফটো

শহীদনূর আহমেদ :: কাজ শুরুর নির্ধারিত সময়সীমার দেড়মাস সময় পার হওয়ার পরও মাটি পড়েনি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার একাধিক বাঁধে। বেঁড়িবাঁধে কবে কাজ শুরু হবে জানেন না হাওর পাড়ের কৃষকরা। বোরো ফসলের সুরক্ষায় বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জের সাংহাই হাওরের শঙ্কিত কৃষকরা প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধের পাড়ে মানববন্ধন করেছেন। শনিবার দুপুরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।  এদিকে ১২নং প্রকল্পের বাঁধে কাজ শুরু হওয়ার আলামত না থাকলেও কাজ শুরু হওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

জানা যায়, কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ সংস্কার ও ভাঙ্গণ বন্ধকরণে এবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের কযেকটি হাওরের ৪৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। ৪০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয় ৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।  ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর এসব প্রকল্পে বাঁধের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে বেশিরভাগ প্রকল্পে কাজ শুরু করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। নির্ধারিত সময়সীমার দেড়মাস পার হয়ে গেলেও এই উপজেলার একাধিক প্রকল্পে এখনও কাজই শুরু হয়নি। কাজ শুরু হওয়া প্রকল্পগুলোতেও ধীরগতি পরিলক্ষিত হয়েছে।

শনিবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সাংহাই হাওরের ১২ ও ১৩নং প্রকল্পে সরজমিনে ঘুরে বাঁধ নির্মাণ কাজের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। দুই প্রকল্পের একাধিক স্থান ক্ষতিগ্রস্থ ও ক্লোজার থাকালেও বাঁধ দুটিতে আদৌ কাজ শুরু হবে কি না এমন প্রশ্ন কৃষকদের। কাজ শুরু না হওয়ায় ফসলের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।  দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ শুরু না হলে সাংহাই হাওরসহ কয়েকটি হাওরের ফসল ঝুঁকিতে থাকবে বলে মনে করছেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। প্রকল্প দুটি সরেজমিনে পরিদর্শণ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংগঠনের নেতারা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কারণে হাওর ডুবির ঘটনা ঘটলে কাউকে ছাড় না দেয়ার হুঁশিয়ারি প্রদান করেন তারা।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, ১৫ ডিসেম্বর বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা। আমরা বিস্মিত, নির্ধারিত সময়ের দেড় মাস পার হয়ে গেলেও ১২, ১৩নং প্রকল্পে কোনো কাজই শুরু হয়নি। আর কবে শুরু হবে? ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করা কথা। যেখানে কাজই শুরু হয়নি সেখানে শেষ হবে কি করে? আমরা সাংহাই হাওরসহ উপজেলার কয়েকটি হাওরের ফসলের সুরক্ষা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। কারো দায়িত্বহীনতায় হাওর ডুবির ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম বলেন, আমরা গতকাল পিআইসিদের নিয়ে কর্মশালা করেছি। বাঁধের কাজ দ্রুত সময়ের করার তাগাদা দিয়েছি। ১৩নং পিআইসির কাজ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে অনেক আগেই কিন্তু পিআইসি কাজ শুরু করেননি। পিআইসি বাতিল হবে কি না তার সিদ্ধান্ত হবে। বাতিল হলে নতুন পিআইসি দিয়ে দ্রুত কাজ শুরু হবে। আর ১২নং প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।  এসব প্রকল্পে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন্নাহার শাম্মী।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn