‘আমাদের ফেনী’ নামে ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে ২২ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া পিতৃপরিচয় খুঁজে পেলেন পাকিস্তানি তরুণী তাহরিম রিদা। তার বাবার বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ফাজিলের ঘাট এলাকায়।  গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৫৭ মিনিটে রিদা তার ব্যক্তিগত আইডি থেকে ‘আমাদের ফেনী’ গ্রুপে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন: ‘আসসালামু আলাইকুম, আমি এখানে আমার বাবার পরিবার খুঁজতে এসেছি। আমার বাবা ২০০৪ সালে পাকিস্তান এসে আমার মাকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশের নোয়াখালী থেকে এসেছিলেন, তার নাম ছিল মুহাম্মদ কাসিম আজাদ, আমার দাদার নাম তফাজুল হক। যিনি সম্ভবত আমার পিতার শৈশবে অতিবাহিত হয়েছিলেন। আমি আমার বাবার পরিবার সম্পর্কে খুব বেশি বা প্রায় কিছুই জানি না।’

গ্রুপে নিজ চাচার একটি ছবি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আবু সাদিক আমার বাবার বড় ভাই। যদি কেউ এই পরিবার সম্পর্কে কিছু জানেন, তবে আমার পরিবারের সাথে দেখা করা যাবে, এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের হবে, যা আমি কখনও দেখিনি।’ স্ট্যাটাস দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রিদার বাবার পরিবারের সঙ্গে মেয়েটির পরিচয় হয়। তার ফুফু ও ফুফাতো বোনের ছেলের সঙ্গে কথা হয়। স্থানীয়রা জানান, তাহরিম রিদার দাবি, কলেজে বা বাইরে গেলে তার বাবার পরিচয় জানতে চায় অনেকেই। পিতৃপরিচয় না থাকায় তাকে অবহেলিত হতে হয়েছে ২২ বছর। রিদার বাবা পাকিস্তান থাকাকালীন তার মা মেহবুবাকে বিয়ে করেন। পাকিস্তানে তার মাকে রেখে দেশে এলে তার বাবা অসুস্থ হয়ে মারা যান। এরপর বাবার পরিবারের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ঘটেনি।

‘আমাদের ফেনী’ গ্রুপের অ্যাডমিন ইমদাদুল হক বলেন, ‘তাহরিম রিদার বাবা দেশে এসে তার মাকে চিঠি পাঠাতেন। চিঠিতে উল্লেখিত ঠিকানা সংগ্রহ করে তাহরিম “ফেনী” শব্দটি পায়। পরে সেটি গুগলে সার্চ করে জানতে পারে এটি একটি জেলা। পরবর্তীতে সে “আমাদের ফেনী” নামক গ্রুপটির সন্ধান পায়। এরপর যাবতীয় তথ্যসহ সে ফেসবুকে ইংরেজিতে পোস্ট করে। সেটি ট্রান্সলেশন করে বাংলায় পোস্ট দেয় অ্যাডমিন প্যানেল। দাগনভূঞার ওসি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্টদের মাধ্যমে তাহরিমের বাবার পরিবারের কাছে বার্তা পৌঁছে যায়। বর্তমানে উভয় পরিবার একে অপরকে এত বছর পর পেয়ে আবেগে আপ্লুত।’

তাহরিমা রিদার সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ করতে চাইলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

‘আমাদের ফেনী’ গ্রুপের আরেক অ্যাডমিন শাখাওয়াত হোসেন রাজীব বলেন, ‘তাহরিম এভাবে তার পরিবারকে খুঁজে পাবে, কখনও কল্পনা করেনি। ফেসবুক গ্রুপের কারণে প্রায় ২২ বছর পর পিতৃপরিচয় পেয়ে তার বহুদিনের কষ্ট দূর হয়েছে। এ ঘটনায় তার পাশাপাশি গ্রুপের অ্যাডমিন ও সদস্যরা বেশ খুশি।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn