দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশের টার্গেট ছিল ফাইনাল। তানভীর-মিরাজুলরা সহজেই পূরণ করেন সেই লক্ষ্য। এবার ট্রফি ছাড়া ভিন্ন চিন্তা নেই বাংলাদেশি কিশোরদের। সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে আজ শিরোপার লড়াইয়ে নামছে বাংলাদেশ। ফাইনালে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ভারত। ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। সবশেষ ফাইনালে ভারতের কাছে হেরেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল বাংলাদেশের। তবে এবার রয়েছে টাটকা সুখস্মৃতিও। আসরের রাউন্ড রবিন লীগ পর্বে ভারতকে ২-১ হারায় বাংলাদেশ। কার্ডের খাড়ায় ফাইনালে পাওয়া যাবে না মিডফিল্ডার শহীদুল ইসলামকে। তবে কোনোকিছুতেই টলছে না বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস।

কোচ পল থমাস স্মলি বলেন, ফাইনাল খেলতে মুখিয়ে আছে তার দল। বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতা বিভিন্ন বয়সীদের নিয়ে হয়েছে। সবশেষ ২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীদের নিয়ে হওয়া আসরের ফাইনালে ২-১ গোলে ভারতের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের পরিসংখ্যানে একচ্ছত্র আধিপত্য ভারতের। আগের পাঁচ আসরেরই চ্যাম্পিয়ন তারা। কিন্তু এবারের বাংলাদেশ দল দুর্দান্ত। রাউন্ড রবিন লীগে একমাত্র অপরাজিত দল বাংলাদেশ।

শ্রীলঙ্কাকে ১-০ গোলে হারিয়ে অভিযান শুরু করে পল স্মলির শিষ্যরা। দ্বিতীয় ২-১ গোলে হারায় শক্তিধর ভারতকে। তৃতীয় ম্যাচে মালদ্বীপকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে আরো একবার নিজেদের সামর্থ্য জাহির করে স্মলির দল। শেষ ম্যাচে নেপালের কাছে ন্যুনতম ৪-০ গোলে হারলেও ফাইনালে খেলতো বাংলাদেশই। তবে ১-১ গোলে ড্র করে অপরাজিত থেকেই ফাইনালের টিকিট কাটে পিয়াস-তানভীররা। লীগ পর্বে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১০ পয়েন্ট। ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে ফাইনালে পা রাখে স্বাগতিক ভারত।  বাংলাদেশ কোচ পল স্মলি প্রতিবেশি দেশটির বিপক্ষে খেলার চাপ-তাপ মেনে নিয়েও ইতিবাচক। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের কোচ বলেন, ‘আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলা ও দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা সবসময় চাপের। এই পর্যায়ের ফুটবল, লীগের খেলা, সবকিছুতেই চাপ আছে। এ পর্যন্ত ছেলেরা যা করেছে, অনেক ভালো করেছে।’

স্মলি বলেন, ‘গ্রুপ পর্বে (রাউন্ড রবিন লীগ) আমরা কোনো ম্যাচ হারিনি। কঠিন মুহূর্ত এসেছিল, কিন্তু সেগুলো আমরা উৎরাতে পেরেছি এবং আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ফাইনাল খেলা, সে মঞ্চে উঠতে পেরেছি। ছেলেরা মুখিয়ে আছে।’ রাউন্ড রবিন লীগের শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে লাল কার্ড পাওয়ায় ফাইনালে খেলা হচ্ছে না শহীদুলের। তবে স্মলি আস্থা রাখছেন বাকিদের ওপর। তিনি বলেন, ‘টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ খেলায় শহীদুলকে অভিনন্দন জানাতে হবে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে ফাইনাল খেলতে পারবে না। এগুলো ফুটবলে হয়। কার্ডের কারণে কিংবা চোটের কারণে খেলোয়াড় হারাতে হয় এবং এগুলোর সঙ্গে মানিয়েও নিতে হয়। যে স্কোয়াড নিয়ে আমরা এসেছি, সেখানে গভীরতা আছে। অন্য যারা খেলার সুযোগ পাবে, তাদের জন্য সুযোগ। আমাদের কোনো সমস্যা নেই। সবার মানসিকতা ইতিবাচক এবং বাংলাদেশের সবার মতো এই ছেলেরাও ফাইনালের দিকে তাকিয়ে আছে।’

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মাধ্যমে পাঠানো ভিডিও বার্তায় স্মলি বলেন, ‘আমি মনে করি, দলের সবাই রোমাঞ্চিত। দেশের ফুটবলপ্রেমীরা, ফেডারেশন, তারাও। ফাইনাল খেলার জন্য এই ছেলেদের অভিনন্দন জানাতে হবে।’ ভুবনেশ্বরের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের অধিনায়ক তানভীর বলেছিলেন, ফাইনালে খেলাটা তাদের প্রথম লক্ষ্য। আসরে পাঁচ গোল পেয়েছেন স্ট্রাইকার মিরাজুল ইসলাম। মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে জোড়া গোল করেন পিয়াস আহমেদ নোভা। আসরে নোভার রয়েছে তিন গোল।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn