তাহিরপুর :: তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে তার বান্ধবীকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। অভিযোগকারী ওই নারী জানান,গত ৮ জুন আমার উপর হামলা করা হয়েছে। আমি এখন হাসপাতালে ভর্তি আছি। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে সময় চেয়েছিলাম। তিনি আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। ওই নারী আরো জানান, আগামী ১৬ জুন আমি যেন সাক্ষ দিতে না যাই সে জন্য আমাকে ০১৮১২৪৮৭৫৮১ মোবাইল ফোন নম্বর থেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই তুই আসবিনা, কি করবি তুই, একবার তোর শিক্ষা হয় নাই, ১৬ তারিখে আসলে দেখনা কি হয়। এমন হুমকির বিষয়টি তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তদন্ত কর্মকর্তা উল্টো ওই নারীকে অসালীন কথা বলেছেন তাতে করে ন্যায় বিচার পাওয়ার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করতে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ এবং দেয়া হুমকির অডিও রেকর্ড ই-মেইলে পাঠিয়েছেন দাবি করেছেন ওই নারী।

সুনামগঞ্জে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এমরান হোসেন ঘটনাটির তদন্ত করছেন। তিনি জানান, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে তার বান্ধবীর আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা গত রোববার (০৯ জুন) দুপক্ষকে ডাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে আসেননি অভিযোগকারী ওই নারী। তিনি মৌখিকভাবে সময় চেয়েছেন। আসিফ ইমতিয়াজ এসে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। অভিযোগ কারী প্রথম তারিখ না আসায় আগামী ১৬ জুন সাক্ষ গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

এদিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)আসিফ ইমতিয়াজ বান্ধবীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক অতঃপর অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলাকায় তোলপার শুরু হয়। বিশেষ করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় সাধারণ মানুষও এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ। বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে কার্যালয়ে না এসে অধিকাংশ সময়ে বাসায় বসে অফিস করছেন ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজ এমনটিই জানা গেছে। এছাড়াও তার ব্যবহৃত সরকারি ফোন নাম্বারটিতেও কল দিয়ে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে ইউএনও অনুপস্থিত থাকায় উপজেলাবাসী তার কাছ থেকে কোন প্রকার সহযোগীতা পাচ্ছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বান্ধবীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ও অন্তঃসত্ত্বার ঘটনায় এখন সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এই বিয়ষটি নিয়ে আমরাও আছি খুবেই লজ্জার মাঝে। তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থার মাঝে আছি। ইউএনওর বিষয়ে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারছিনা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ ইমতিয়াজের মোবাইল ফোনে অসংখ্যবার ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিপ করেননি।

জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলায় নব-যোগদানকারী ইউএনও তার পূর্বের কর্মস্থল চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায় পূর্বে বিয়ে করা স্ত্রীর সাথে ডির্ভোস হয়। কিন্তু শ্বশুর পেশাদার উকিল হওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ বিলম্বিত হচ্ছিল চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এডিসি (এলএ) আসিফ ইমতিয়াজের। কিন্তু বান্ধবীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের পরিনতিতে সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়েন সেই নারী। আসিফের ইচ্ছে গর্ভপাতে সাড়া না দিলে সম্পর্কের অবনতি ঘটে তাদের মধ্যে। আর তাই হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দেন সেই বান্ধবী। গত ০৩এপ্রিল লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের কাছে আসিফ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে বিচার চান ওই নারী। এরপর একজন এডিসিকে বিষয়টির তদন্তভার দেয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে এ ঘটনা অস্বীকার করেন ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn