ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আদলে বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ করা নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি মিঠুন চৌধুরীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকার সূত্রাপুর থানা এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা তাকে আটক করেছেন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী সুমনা চৌধুরী। তিনি জানান, গত বৃস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তার সাথে আমার মুঠোফোনে সর্বশেষ কথা হয়েছে। আমি সিলেটের বালুচরের বাসাতে আছি। পরে রাত ১২ টার দিকে পার্টির লোকেরা আমাকে জানিয়েছেন যে মিঠুনকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা আটক করেছেন। সুমনা চৌধুরী জানান- তার স্বামীকে কি কারণে আটক করা হয়েছে সেটি জানতে পারিনি। তবে তার বিরুদ্ধে আমাদের জানামতো কোন মামলা নেই। তবে বৃহস্পতিবার সারাদিনই বালুচরের বাসাতে পুলিশ প্রহরা ছিলো। এদিকে এ ব্যাপারে শাহপরাণ থানাা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বলেন- মিঠুন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৪টি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তার বিরুদ্ধে আমাদের থানায় ৪টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। আমরা তাকে দীর্ঘদিন ধরে গ্রেফতারের জন্য খুঁজছিলাম। ঢাকা থেকে যদি পুলিশ তাকে আটক করেছে কিনা সেটি আমরা অবগত নই।

বিজেপি সভাপতি মিঠুনের পুরো নাম সুধাংশু রায়। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলি ইউনিয়নের রহিমাপুর গ্রামে। স্থানীয়সূত্র মতে, মিঠুন চৌধুরী নাম নেওয়া সুধাংশু রায় ১৯৯১ সালে এসএসসি পাস করে এলাকা ছাড়ার পর মাঝেমধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন উৎসবে স্বল্প সময়ের জন্য এলাকায় আসতেন। ভারত ঘুরে এসে নিজের প্রকৃত নাম  গোপণ করে নতুন নাম নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল করেন তিনি। এ ঘটনায় এলাকাবাসীও বিস্ময় প্রকাশ করেছে। সুধাংশু রায় ওরফে মিঠুন চৌধুরীর বাড়ি মরা পিয়ান নদীর তীরে। তাঁর বাড়িতে দুটি টিনশেড ঘর আর একটি আধাপাকা কালী মন্দির রয়েছে। সাচনবাজার থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে রহিমাপুরের এই  বাড়িতে তাঁর মা রেণুবালা রায় (৮৫) ও তিন ভাই থাকছেন। ইন্দ্রজিত রায় নামের এক ভাই বর্তমানে ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাঁর ছোট ভাই বিশ্বজিৎ রায় সেন্টু মাদক কারবারের অভিযোগে সম্প্রতি জেল খেটে বেরিয়েছেন। অন্য ভাইয়েরা তাঁর বাবার মসলার ব্যবসায় নিয়োজিত। তাঁর বাবা হরেন্দ্র রায় স্থানীয় বাজারে ফেরি করে মসলা বিক্রি করতেন।
এর আগে সাংবাদিকদের কাছে নিজের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে এবং রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে মিঠুন চৌধুরী মন্তব্য ছিলো, ‘আমরা কলসিন্ধুর জমিদার ছিলাম। আমরা জাতে চৌধুরী। মামার বাড়ি এলাকায় স্থায়ী হয়েছি বলে আমরা রায় উপাধি গ্রহণ করেছি। আমার বাবার প্রকৃত পরিচয় জানার পর আমি চৌধুরী উপাধি নিয়েছি।’ এলাকা ছাড়ার পরই মিঠুন নামে তিনি পরিচিত বলে দাবি করেন। বিজেপি গঠনের আগে তিন মাস ভারতে অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সেখানের অনেক মন্ত্রী-এমপির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তাঁরা আমাকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।’ রাজনৈতিক দল ঘোষণার পর তাঁর সঙ্গে অনেক দলের নেতারা যোগাযোগ করছেন জানিয়ে মিঠুন চৌধুরী দাবি করে বলেন, ‘আমরা আগামী দিনে নির্বাচন করে সরকার গঠন করব।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn