জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নৌমন্ত্রী শাহাজাহান খানের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, একটি হাসি গোটা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। বাস-টাক চাপায় মানুষ মরলে মন্ত্রী হাসে। এদের কাছে মানুষের কোনো মুল্য নেই। কোমলমতি শিশুরা রাজনীতি বুঝে না। তারা বাচঁতে চায়। তারপরও তাদের উপর ছাত্রলীগ যেভাবে হামলা করলো তা দুঃখজনক। পরিবহন শ্রমিকদের কাছে আজ আমরা জিম্মি। বাস চলুক আর না চলুক, সরকারকে অনুরোধ করবো তাদের সাথে কোনো আপোষ নয়। আইন সবাইকে মানতে হবে। গতকাল সুপ্রীমকোর্ট বার মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আইনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জাপা কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন, পরিমল কুমার বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট ইয়াহিয়, গিয়াস উদ্দিন, ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রমূখ। এইচ এম এরশাদ বলেন, রাজনীতিবিদদের এখন কোনো সম্মান নেই, মানুষ ঘৃণার চোখে দেখে। সেজন্য নিজেকে সৈনিক পরিচয় দেই। বর্তমান সংসদে ১৫৪ জন এমপি বিনা ভোটে নির্বাচিত, তাদেরকে রাজনীতিবিদ বলিইবা কি করে? তিনি বলেন, আমার মত নির্যাতিত রাজনীতিবিদ আর দেখেনি। আমি ক্ষমতায় থেকে একদিনের জন্যও শান্তিতে দেশ চালাতে পারিনি। ৩৬৮দিন হরতাল দেয়া হয়েছে। এখনও শান্তিতে ঘুমাতে পারি না। মামলায় জর্জরিত। আমি কি এমন খারাপ কাজ করেছি, কি অন্যায় করেছি? যে আমাকে এত অত্যাচার সইতে হবে। ১৪ বছর নয় মাস পর মঞ্জু হত্যা মামলা করা হলো আমার বিরুদ্ধে। জিয়া হত্যার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত মঞ্জু। অথচ তারা জিয়া হত্যার বিচার চায় না। যখনই মঞ্জু হত্যার রায় ঘোষণার সময় হয়, তখনই জজ পরিবর্তন করা হয়। এই পর্যন্তু ৭টি জজ পরিবর্তন করা হয়েছে। আমার মত নির্যাতিত রাজনীতিবিদ যেন আর জন্মগ্রহণ না করে।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, সামনে নির্বাচন। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেই নাই। গত কয়েক বছর অনেক বঞ্চণার শিকার হয়েছি। আর হতে চাইনা। ভেবে চিন্তেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিবো। তিনি আরো বলেন, আমি রাস্তায় বেরুলেই দেখি ফুটপাতে মানুষ শুয়ে আছে। খাবার নেই, চাকরি নেই। কেউ দেখে না। আর এটাই হচ্ছে আমাদের উন্নয়নের মহাসড়ক।
সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমালোচনা করে বলেন, ১/১১-এর আগে তারেক আমার বাসায় এসে আমাকে হাওয়া ভবনে যেতে বললেন। বললেন আপনি আমাদের সাথে জোট করবেন এবং আপনাকে ১৮টি আসন দেয়া হবে। না হলে আপনাকে দেশ ছাড়তে হবে। আমি ওর পিতৃসমতূল্য, সে আমার সাথে এ ভাষায় কথা বলতে পারে ভাবতেও অবাক লাগে। তারপর আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু কি পেলাম? আওয়ামী লীগ আমার প্রতি অবিচার করলো। দল ভাঙ্গলো, আমাকে জেলে নিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য করলো। সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে শেখ সিরাজুল ইসলাম আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সাম্পদ্রায়িক স¤প্রীতির দুর্ণীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকলকে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।

Print

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn