আমার মাথায় যখন বুদ্ধি সুদ্ধি বলতে কিছু ছিল না, তখন বিয়ে করেছিলাম। চাপে পড়ে এবং উপায় না দেখে মনে করেছিলাম বিয়েটা বুঝি করতেই হবে। ঘর সংসার না করলেও বিয়ে জাতীয় কিছু একটা করেছিলাম বলে তখন বিশ্বাস করেছিলাম। অবশ্য আইনের চোখে ওগুলো হয়তো বিয়েই ছিল না। আমি অবাক হই যখন দেখি বয়স হওয়া, অভিজ্ঞতা হওয়া, মাথায়  বুদ্ধি সুদ্ধি প্রচুর, উপার্জন প্রচুর, নিজের পায়ে দাঁড়ানো স্বাবলম্বী মেয়েরা এই কুৎসিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বিয়ে করে! আজ দেখলাম শমী কায়সার ভীষণ সেজেগুজে তার তৃতীয় বিয়েটি করছে। কী গ্যারেন্টি যে এই পুরুষটির সঙ্গে দীর্ঘদিন সে বাস করতে পারবে! কিছু ন্যাড়া হয়তো বারবার বেলতলায় যেতে পছন্দ করে।

শমীর যত খুশি তত বিয়ে করার স্বাধীনতা আছে। এ তার জীবন। এই জীবনকে তার পছন্দ- মতো যাপন সে করবে। কেউ বাধা দেওয়ার নেই। শমী সুখে শান্তিতে আনন্দে আহ্লাদে থাকুক। বাংলাদেশের মতো নারীবিদ্বেষী সমাজে স্বাধীন এবং সচেতন কোনও মেয়ে এমন কোনও পুরুষ কি পেতে পারে যে-পুরুষ নারীর সমানাধিকারে একশ’ভাগ  বিশ্বাস করে?  আমার সংশয় হয়। শিক্ষিত, এমন কী উচ্চশিক্ষিত মেয়েদেরও নিজের স্বাধীনতা এবং অধিকার বিসর্জন দিয়ে  বিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়।  বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমি বিয়ে টিয়ে করি না। আমার সংসার আমার একার সংসার। একার সংসারের মতো চমৎকার আর কিছু নেই। বিশেষ করে স্বর্নিভর এবং সফিস্টিকেটেড মেয়েদের সংসার। যতদিন পুরুষেরা নারীবিদ্বেষী, যতদিন চারদিকে কুৎসিত পুরুষতন্ত্রের জয় জয়কার, যতদিন তারা প্রভুর ভূমিকায়, ততদিন তাদের গলায় মালা পরানোর কোনও অর্থ হয় না। জানি কেউ কেউ বলবে সব পুরুষ মন্দ নয়। অবশ্যই নয়, মন্দ-নয়-পুরুষেরা স্ত্রীদের দেখভাল করে, স্ত্রীদের ভাত কাপড় দেয়, সম্ভব হলে গয়নাও গড়িয়ে দেয়। মন্দ-নয়-পুরুষেরাও কিন্তু অবাধ্য স্ত্রীদের সহ্য করে না। সুতরাং অবাধ্য হলে চলবে না। আমি আবার অবাধ্য মেয়েদের খুব ভালোবাসি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn