আইসিসির ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সাতে। শ্রীলঙ্কা আটে ও জিম্বাবুয়ে রয়েছে দশে। আজ শুরু হতে চলা ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে তাই প্রতিপক্ষ দলের চেয়ে পরিষ্কারভাবে এগিয়ে বাংলাদেশ। আজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ঘরের মাঠে পরিকল্পনার ৭০/৮০ ভাগ প্রয়োগেই ভালো কিছু সম্ভব বলছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক আরো বলেছেন, চাপ আর ভয়-স্নায়ুচাপে (নার্ভাসনেস) সেরা পারফরম্যান্স বের হয়। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের সাফল্যে বিদায়ী কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের চেয়ে নিজের সতীর্থদেরই বেশি কৃতিত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। স্বাগতিক বাংলাদেশ গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে বেলা ১২টা থেকে অনুশীলন করেছে। বেশিরভাগ সময়ই তারা কাটিয়েছে ইনডোরে। অনুশীলনের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের আশা ব্যক্ত করেছেন মাশরাফি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রত্যাশা অবশ্যই সবার যা আমাদেরও তা। আমরা অবশ্যই জিততে চাই এবং ভালোভাবে জিততে চাই। তারপর ধারাবাহিকভাবে টুর্নামেন্টে টিকে থাকা প্রতিপক্ষ যেই হোক সেটা সহজ হবে না। বিশেষ করে যদি জিম্বাবুয়ের দিকে তাকান তাহলে তারাও ভালো দল। সমপ্রতি তারা শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতে হারিয়ে এসেছে। শ্রীলঙ্কাও ভালো দল। ভারতে তারা একটা ম্যাচ জিতে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে গেলে আমাদেরকেও টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে টিকে থাকতে হবে।’ ঘরের মাঠে প্রায় পনের মাস পর ওয়ানডে খেলা। মাশরাফি বলছেন, চাপেই সেরাটা বের হয়। তিনি বলেন, ‘দেশের হয়ে খেলতে নামলে আপনি যার বিপক্ষেই খেলেন না কেন চাপ থাকবেই। চাপ অবশ্যই থাকবে। আমার কাছে মনে হয় এটা থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ ভালো জিনিসও। সেরা পারফরম্যান্সটা চাপে থাকা অবস্থায় বের হয়।’

হাথুরুসিংহে ও হিথ স্ট্রিকরা বাংলাদেশ দল সম্পর্কে জানেন। ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন সাবেক দুই কোচের চিন্তা, পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা আছে তাদেরও। তাই নিজেদের পরিকল্পনার অন্তত ৭০-৮০ ভাগ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে চান মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘আমাদের পুরো দল সম্পর্কে তাদের ধারণা থাকতে পারে। ওদের চিন্তা ভাবনা, যে পরিকল্পনা করতে পারে সেটা আমাদেরও সবাই জানে। আমাদেরকেও ওভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। আমাদের পরিকল্পনার অন্তত ৭০-৮০ ভাগ মাঠে প্রয়োগ করতে পারি তাহলে আশা করি সমস্যা হবে না। আমাদের নজর এখন সেখানেই।’ বাংলাদেশের ড্রেসিংরুম নির্ভার রয়েছে। তবে মাশরাফির চাওয়া কিছুটা চাপ থাকুক সবার মাঝে। তার মতে, অনেক সময় নার্ভাসনেসের কারণে সেরাটা বের হয়। তিনি বলেন, ‘অনেকটা নির্ভার মনে হচ্ছে। পাশাপাশি এটা চাই না অনেক বেশি নির্ভার থাকুক। বেশি নির্ভার থাকলে মাঠে নেমে কঠিন পরিস্থিতিতে হয় কি, অনেক সময় নার্ভারনেস থেকে সেরা পারফরম্যান্স বের হয়ে আসে।’ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গত কয়েক বছরের সাফল্যের পেছনে শুধু হাথুরুসিংহের কৃতিত্বকেই বড় করে দেখছেন না মাশরাফি। তার মতে, মাঠে সবকিছুর বাস্তবায়ন করেছেন ক্রিকেটাররাই। মাশরাফি বলেন, ‘বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে যারা খেলোয়াড় আছে তারা অনেক বড় মানসিকতা নিয়ে ঘোরে। খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে হাথুরুসিংহেকে টুপিখোলা অভিনন্দন। অবশ্যই কৃতিত্ব তাকে দিতে আমাদের বিন্দুমাত্র সংকোচ নেই। আবার আমাদের বলতে হবে ২২ গজে আমরাই বাস্তবায়ন করেছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের তামিমের রেকর্ড, মুশফিকের রেকর্ড শেষ বছরে যদি দেখেন। সাকিবের ক্যারিয়ার যদি দেখেন। তো মুস্তাফিজ। এগুলো যদি আলাদা আলাদা করে দেখেন ২২ গজে কোচ তাদেরকে বিশেষ কিছু করে দেয়নি। তাদের নিজেদের এটা করে নিতে হয়েছে।’
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn