মরমি সাধক হাসন রাজার প্রপৌত্র ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার তিনবারের চেয়ারম্যান প্রয়াত কবি মমিনুল মউজদীনের দশম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় বক্তারা বলেছেন, তিনি একজন স্বপ্ন ও সত্যদ্রষ্টা মানুষ ছিলেন। অন্যায়-অনিয়মের সঙ্গে কখনো আপোষ করেননি। এই আলোকিত মানুষটি জোছনা উপভোগ করার জন্য রাতে শহরের সড়ক বাতি নিভিয়ে দিতেন। এতে তাঁর সৃজনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মমিনুল মউজদীন স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক অ্যাড. হোসেন তওফিক চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, একজন মানুষ যখন তার সন্তানদের নাম বিপ্লবী ফিদেল কিংবা বিখ্যাত কবি কাহলিল জিবরানের নামে নাম রাখেন তখন তাঁর ভিতরকার মানুষটির পরিচয় আমাদের সামনে ফুটে ওঠে। তাঁর আদর্শ, তাঁর স্বপ্ন আমাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, আমি রাজনীতিবিদ ও কিংবা জনপ্রতিনিধি মউজদীনের চেয়ে কবি মমিনুল মউজদীনকে বেশি চিনি। কবিরা এমনই হন। তারা সমাজকে আলোর পথে নিয়ে যান। তাদের ভাবনায় যেমন প্রেম থাকে, তেমনি তাকে সমাজ বদলের স্বপ্ন। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, বর্তমান সরকার শিল্প-সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতায় অনেক কাজ করছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকও একজন কবি এবং তিনি সুনামগঞ্জের সন্তান। সরকারের মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিনও একজন কবি। এই সরকারে অনেক কবি-সাহিত্যিক আছেন। তারা সকল কাজে আমাদের প্রেরণা জোগান।
মমিনুল মউজদীন স্মৃতিবৃত্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক মো. রাজু আহমেদ’র সঞ্চালনায় স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রবীণ শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু, পরিমল কান্তি দে, যোগেশ্বর দাস, কবি মমিনুল মউজদীন স্মৃতিবৃত্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক আলী হায়দার, সৃজনবিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ জাকিয়া নাসরিন, সাংবাদিক পঙ্কজ কান্তি দে প্রমুখ। অনুষ্ঠানে এবারের মমিনুল মউজদীন স্মৃতিবৃত্তি প্রাপ্ত ৬৫জন শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট, প্রাইজবন্ড, সনদপত্র ও কবি মমিনুল মউজদীনের কাব্যগ্রন্থ উপহার দেওয়া হয়। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মমিনুল মউজদীন, তাঁর স্ত্রী তাহেরা চৌধুরী, ছেলে কাহলিল জিবরান ও ব্যক্তিগত গাড়ি চালক কবির মিয়া মারা যান। গতকাল সকালে প্রথমেই তাঁদের কবরে মমিনুল মউজদীন স্মৃতি সংসদ ও পৌরসভার পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় জেলা পরিষদের সদস্য সৈয়দ তারিক হাসান দাউদ, পৌর কাউন্সিলর খুরশেদ আহমদ, হাসন রাজার প্রপৌত্র দেওয়ান সাজাউর রাজা সুমন, মমিনুল মউজদীন স্মৃতিবৃত্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক আলী হায়দার, সাবেক পৌর কাউন্সিলর মোসাদ্দেক হোসেন বাচ্চু, সমাজকর্মী ঝুটন পুরকায়স্থ, হোসেন আহমদ, আবদুল কাইয়ুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn