একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৌলভীবাজারের দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন। এর আগে বুধবার (১০ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টার দিকে ২০২ পৃষ্ঠার রায় পড়তে শুরু করেন বিচারকরা। বেলা পৌনে ১২টার দিকে সাজার আদেশ দেওয়া হয়। এই মামলার আসমিরা হলেন মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার শামসুল হোসেন তরফদার, মোবারক মিয়া, নেসার আলী, ইউনুস আহমেদ এবং ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী। তবে ইউনুস আহমেদ ও ওজায়ের আহমেদ চৌধুরী ছাড়া বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও প্রসিকিউটর তাপস কান্তি বল। আসামিদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন। এর আগে, গত বছরের ২০ নভেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি যেকোনও দিন রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল। এই আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মোট পাঁচটি অভিযোগ রয়েছে।

মামলার ১নং অভিযোগে একাত্তরের ২২ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে মামলার পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার বালিগাঁও গ্রামের শহীদ দানু মিয়ার বাড়ি, ছমেদ উল্লার বাড়ি, তাজু মিয়ার বাড়ি এবং মৌলভীবাজার মহকুমা শহরে লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, অন্যায় আটক, নির্যাতনসহ শহীদ দানু মিয়াকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ২নং অভিযোগে উক্ত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে একাত্তরের ২৩ নভেম্বর রাতে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর থানাধীন নন্দিউড়া গ্রামের হরেন্দ্র ভট্টাচার্য্যের বাড়ি, রাজনগর থানা এবং মৌলভীবাজার মহকুমা শহরে লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা, অপহরণ, অন্যায় আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ৩নং অভিযোগে আসামি নেছার আলী, ইউনুছ আহমদ এবং উজের আহমেদের বিরুদ্ধে একাত্তরের ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর থানাধীন রাজাপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের বাড়ি, উত্তরভাগ গ্রামের ইন্দেশ্বর দাতব্য চিকিৎসালয়ের আবাসিক ভবন এবং মৌলভীবাজার মহকুমা শহরে লুণ্ঠন, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও ডাক্তার যামিনীমোহন দেবকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ৪নং অভিযোগে আসামি নেছার আলী, ইউনুছ আহমদ এবং উজের আহমেদের বিরুদ্ধে একাত্তরের ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের রাজনগর থানাধীন উত্তরভাগ গ্রামের ডাক্তার রসরাজ ভট্টচার্য্যের বাড়িতে লুণ্ঠন, অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ৫নং অভিযোগে উক্ত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে একাত্তরের ২৯ নভেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর থানাধীন দক্ষিণ খলাগ্রাম (নরাটিলা) সেকান্দার আলী, শহীদ আব্দুল বাছিত ওরফে বাদশার বাড়ি, রাজনগর থানা এবং মৌলভীবাজার মহকুমা শহরে লুণ্ঠন, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও ন্যাপ নেতা মো. নজাবত আলীকে সহ ১৪ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn