যশোর ঈদগাহ ময়দানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে প্রবেশের সময় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে জেলা যুবলীগের সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঈদগাহ মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- জেলা যুবলীগের সদস্য ও শহরের ওয়াপদা মোড় এলাকার খায়রুল ইসলামের ছেলে রাজিবুল আলম (৪২), শহরের রায়পাড়া এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে ইমাম হোসেন (২২), শহরের কারবালা এলাকার ইসহাকের ছেলে বিপ্লব (৩০) ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকার আশরাফুল কবির শিকদার (৪০)। রবিবার যশোরে প্রধানমন্ত্রীর যশোর সফর উপলক্ষে স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে সমাবেশের আয়োজন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। বিকাল তিনটায় এই সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সকাল থেকেই সমাবেশস্থলের দিকে আসতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ঈদগাহের পাশে হঠাৎ গোলযোগ তৈরি হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদগাহ ময়দানে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশস্থলে আগে ঢোকাকে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়ায় দুই পক্ষ।হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাজিবুল আলম জানান, প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীর মিছিল নিয়ে তারা জনসভাস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। ঈদগাহ মোড়ে পৌঁছলে ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজি সুমন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিপুলের নেতৃত্বে তাদের মিছিলে বাধা দেওয়া হয়। বাধা দেওয়ার কারণ জানতে এগিয়ে গেলে ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতে চারজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতরা জানান, তারা সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারী। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঈদগাহের গেটের সামনে দিয়ে মিছিল নিয়ে ঈদগাহের ভেতরে ঢুকতে গেলে প্রতিপক্ষ তাদেরকে বাধা দেয় এবং এক পর্যায়ে ছুরি নিয়ে হামলে পড়ে। আর চারজন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অন্য নেতাকর্মীরা উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে৷ যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবদুর রশিদ বলেন, ‘জখম চারজনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রাজিবুল ও বিপ্লব ছুরিকাহত। বাকি দু’জনের শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে।’

যশোর আওয়ামী লীগ সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের দ্বন্দ্ব রয়েছে। দুই নেতার দ্বন্দ্বের জেরে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনে আছে বিভক্তি। দুই পক্ষ নানা সময় মারামারিতে জড়িয়েছে, খুনোখুনিও হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আগে পুরনো দ্বন্দ্বের প্রকাশ ঘটেছে কি না, এ নিয়ে কোনো নেতা নাম প্রকাশ করে কিছু বলতে চাইছেন না। এদিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আশপাশে অবস্থান এবং মারামারির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মী নিরাপত্তা আরও জোরদার করেছে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ বাহিনী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স-এসএসএফও তৎপর থাকে। এর মধ্যেই এই ধরনের ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই নানা আলোচনা তৈরি করেছে। কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, ‘মিছিলে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে চারজন আহত হয়েছেন। তারা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn